ফুলবাড়ীতে পাওনা’র টাকাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ আহত -৬

Estimated read time 1 min read
Ad1

বিপুল মিয়া, ফুলবাড়ী(কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি >>

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে জমি বন্ধকের পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে সোমবার বিকালে উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের নাওডাঙ্গা বাজারে বাকবিতন্ডা এবং রাত ১০ টার দিকে একই ইউনিয়নের বালার হাট বাজারে পাওনাদার পক্ষ ও দেনাদার পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের ৬ জন আহত হয়েছেন।

জানাগেছে, নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের খলিশা কোঠাল গ্রামের আইয়ুব আলী একই ইউনিয়নের কিশামত শিমুলবাড়ী গ্রামের আব্দুল লতিফের সাথে জমি বন্ধকের টাকার লেনদেন ছিল।

সোমবার শেষ বিকালে আইয়ুব আলী, নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মানিক মিয়া বাবু সহ আরো ২/৩ জন সহ সেই টাকা চাইতে নাওডাঙ্গা বাজারে গেলে সেখানে আব্দুল লতিফের সাথে প্রচন্ড বাকবিতণ্ডা ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটলে বাজারের লোকজন আইয়ুব আলীর লোকজনকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নাওডাঙ্গা বাজারের কয়েকজন দোকানদার জানান, আইয়ুব আলী লোকজন নিয়ে বালারহাট বাজারে যাওয়ার পরে নাওডাঙ্গার এক স্থানীয় আ’লীগ নেতা সেখানে উপস্থিত হয়ে আইয়ুব আলীকে দেখে নেয়ার কথা বলে লোক জড়ো করে এবং রাত দশটার দিকে বালারহাট বাজারের দিকে রওনা হন।

পরে তারা বালারহাট বাজারের গরু হাটিতে পৌঁছালে সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এসময় আব্দুল লতিফের গ্রুপের কিশামত শিমুলবাড়ী গ্রামের জহুরুল হকের ছেলে বেনজীর আহমেদ, বাবলা, আব্দুস সাত্তারের ছেলে আশরাফুল হক, পশ্চিম বালাতারী গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে আদম আলী এবং আইয়ুব আলী গ্রুপের বাবু ও গজেরকুটি গ্রামের মৃত আশরাফ আলীর ছেলে জোনাব আলী গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন।

আহতদের উদ্ধার করে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। জোনাব আলীর অবস্থা বেশি গুরুতর হওয়ায় মঙ্গলবার সকালে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুরে পাঠানো হয়েছে।

পাওনা টাকার বিষয়ে আব্দুল লতিফের ভাই পেয়ারুল জানান, আইয়ুব আলী আমার ভাইয়ের কাছে সরাসরি কোন টাকা পায় না।আমাদের গ্রামের একজনের কাছে আইয়ুব আলী গাঁজা বিক্রির টাকা পেত।

সেই টাকা নিয়ে কিছুদিন আগে ঝামেলা হয় পরে আমার ভাই সে টাকা দিতে চেয়েছিল।সোমবার বিকালে এই গাঁজার টাকাকে কেন্দ্র করে বাকবিতন্ডার পরে রাতে মারামারির ঘটনা ঘটে।

পাওনাদার আইয়ুব আলী জানান, চার বছর আগে লতিফ মিয়া আমার কাছ থেকে জমি বন্ধকের ১লক্ষ টাকা নেয় এবং সেই বন্ধকি জমির বিপরীতে প্রতি মৌসুমে ১০ মণ করে ধান দেয়ার চুক্তি হয়।

চুক্তি মোতাবেক সে এক বছরে আমাকে ১০ মণ করে মোট ২০ মণ ধান দেয়। এরপর থেকেই সে ধান দিতে টালবাহানা শুরু করে।

তিন বছর থেকে সে আমাকে জমির ধান দিচ্ছে না। আমাকে আজ দিবে কাল দিবে বলে ঘুরাচ্ছে। আমি টাকা লেনদেনের সাথে জড়িত ও অন্যান্য ব্যক্তিদের সাথে নিয়ে টাকা ও ধানের জন্য বহুবার তার কাছে গিয়েছি।

কিছুদিন আগে সে টাকা লেনদেনের সাথে জড়িত পরেশ বিএসসির স্বাক্ষরিত চেকের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকা দেয় এবং পরবর্তীতে দুই ধাপে ২০ হাজার করে মোট ৮০ হাজার টাকা ফেরত দেয়।

অবশিষ্ট ২০ হাজার টাকা ও ধান ৫ সেপ্টেম্বর দিবে বলে তারিখ দেয়।তারিখ মোতাবেক স্বাক্ষীদের সাথে নিয়ে তার কাছে টাকা চাইতে গেলে সে গালাগালি করতে থাকলে আমাদের সাথে ধাক্কাধাক্কি হয়।পরে আমরা সেখান থেকে বালারহাট বাজারে চলে আসি।

এরপর রাতে দলবল নিয়ে তারা আমাদের উপর হামলা চালায়।হামলার শিকার দুই জন গুরুতর আহত রয়েছেন। আহতরা সুস্থ্য হলে আমার ন্যায্য পাওনা অবশিষ্ট টাকা ও বন্ধকি জমির পাওনা ৬০ মণ ধানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিব।

টাকা লেনদেনের সাথে সরাসরি জড়িত পরেশ বিএসসির সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আইয়ুব আলী লতিফের কাছে জমি বন্ধকের টাকা পায়।

এখন যে গাঁজার ব্যবসার টাকার কথা বলা হচ্ছে এটি আসলে মিথ্যা। জমি বন্ধকের ১ লাখ টাকার ৮০ হাজার টাকা ইতিমধ্যে ফেরতও দেয়া হয়েছে। আর ৬০ মণ ধানের যে কথা ওঠেছে তা আমার সঠিক জানা নেই।

তবে জমি বন্ধকের টাকা লেনদেনের সময় প্রতি মৌসুমে ১০ মণ করে ধান দেয়ার চুক্তি হয়েছিল। এরপর লতিফ আইয়ুব আলীকে ধানও দিয়েছে। কিন্তু কি পরিমাণ ধান এখনো পাওনা আছে তা আমি জানিনা।

এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাজীব কুমার রায় জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় এখনো কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours