ইসমাইলুল করিম, লামা- বান্দরবান :
বিশ্ব মহামারি করোন ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সবধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর সংক্রমণ কিছুটা কমে আসায় ৫৪৩ দিন পর রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলেছে। প্রতিটি স্কুলে ছাত্র ছাত্রীদের পদচারণায় উৎসবমূখর পরিবেশ বিরাজ করছে।
তবে সংক্রমণ বাড়লে আবার বন্ধ হতে পারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ফাইতং খেদারবাঁধ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারি নির্দেশ মোতাবেক শ্রেণী কার্যক্রম শুরু করে, হাত ধোয়া গোলাপ ফুল দিয়ে ও ইনফ্রারেড থার্মোমিটার দ্বারা ছাত্র/ছাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা মাপানো হচ্ছে।
ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্য বিধি মেনে, দূরত্ব রক্ষা বিষয় দিকনির্দেশনা মূলক বক্তব্য দেন বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শফি। ছাত্র/ছাত্রীদের হাত দুয়ে দেখান বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি সভাপতি ও প্যানেল চেয়ারম্যান মুহাম্মদ জুবাইরুল ইসলাম জুবাইর।
শারীরিক উপস্থিতিতে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আগে থেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত করার নির্দেশনা অনুযায়ী প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বরণ করতে সাজানো হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
রবিবার(১২ সেপ্টেম্বর)সকালে সরেজমিন
বান্দরবানের লামায় ফাইতং খেদারবাঁধ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ বিভিন্ন স্কুল ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের আগমন উপলক্ষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। বিশেষ করে প্রাথমিক স্কুলগুলোতে সকাল ৮ টার আগেই শিক্ষার্থীরা নতুন স্কুল ড্রেস পরে অভিভাবকের হাত ধরে উপস্থিত হতে দেখা গেছে।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রাথমিকে প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুইটি শ্রেণির পাঠদান অনুষ্ঠিত হবে। সে অনুযায়ী একটি রুটিনও প্রণয়ন করা হয়েছে। রুটিন অনুযায়ী, আজ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির সঙ্গে তৃতীয় শ্রেণির ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে। তবে বিষয়টি না জেনে অন্য শ্রেণির অনেক শিক্ষার্থীদেরও স্কুলে চলে আসতে দেখা গেছে।
ফাইতং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয় গেট থেকে ঘুরে যেতে থাকা কয়েকজন শিক্ষার্থীর মা জানান, আমরা শুধু স্কুল খোলা সেটা জেনেছি, আলাদা আলাদা দিনে ক্লাস হবে সেটা জানতাম না। চতুর্থ শ্রেণির ক্লাস আজ না হওয়ায় আমরা ঘুরে যাচ্ছি।
খেদারবাঁধ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন পরে আজ স্কুলে আসতে পেয়ে আমরা উৎফুল্ল ও আনন্দিত।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন দু’টি শ্রেণির তিনটি বিষয়ে সর্বোচ্চ তিন ঘণ্টা পাঠদান ও শ্রেণি কার্যক্রম চলবে। এরমধ্যে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহের প্রত্যেক দিন বিদ্যালয়ে যাবে। তাদের সাথে শনিবার চতুর্থ শ্রেণি, রবিবার তৃতীয় শ্রেণি, সোমবার দ্বিতীয় শ্রেণি এবং মঙ্গলবার প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যাবে। সপ্তাহের বাকী দুদিন পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এককভাবে বিদ্যালয়ে যাবে। সকাল ৯ টা ৪০ মিনিট থেকে শুরু হবে শ্রেণি পাঠদান। পাঠদান শুরুর আগে ১০ মিনিট কোভিড-১৯ সচেতনতা বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অবহিত করা হবে।
অপরদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার গাইডলাইন অনুযায়ী, গত ৯ সেপ্টেম্বর ১৯টি নির্দেশনা দেওয়া হয়।এতে জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি ও তিন ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা সহ কীভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলবে তাও উল্লেখ করা হয়।
+ There are no comments
Add yours