বিপুল মিয়া, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম )প্রতিনিধি >>
দেশের উত্তরে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তঘেষা জেলা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে অস্বাভাবিক হারে জ্বর সর্দির প্রকোপ দেখা দিয়েছে।ফলে উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের প্রতিটি পরিবারে জ্বর-সর্দির প্রকোপ দেখা দেওয়ায় অভিভাবকরা চরম উদ্বিগ্ন।
সারাদেশের মতো এ উপজেলায় করোনা সংক্রমণ কমলেও গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিটি পরিবারে শিশু- বয়স্কদের মাঝে ব্যাপক জ্বর-সর্দির প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।এ দিকে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ফুলবাড়ী হাসপাতালে বিভিন্ন বয়সের ১৭ জন জ্বরের রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন।
এছাড়াও উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ- খবর নিয়ে জানা গেছে, কমপক্ষে দুই থেকে তিন শতাধিক শিশু-বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ জ্বর- সর্দি আক্রান্ত রোগীর গ্রামের পল্লীচিকিৎকদের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছে।
এ দিকে বৃহস্পতিবার সকালে ফুলবাড়ী হাসপালে গিয়ে দেখা গেছে ,বিভিন্ন বয়সের কয়েকজন জ্বরের রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।
হাসপাতালের জরুরী বিভাগের তথ্য অনুযায়ী গত এক সপ্তাহে ফুলবাড়ী হাসপাতালে ১৭ জ্বরের রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। বর্তমানে ৬ জন জ্বরের রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে বলে জরুরী বিভাগ জানিয়েছেন।
হাসপাতালে ভর্তি জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তিরা হলেন, কবির মামুদ এলাকার গোলাম মোস্তফা (৬৫), একই এলাকার সাদিয়া আক্তার শাম্মী (৫), চন্দ্রখানা এলাকার শরিয়ত আলী (৫৫), পানিমাছকুটি এলাকার ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তুলি খাতুনসহ ৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিবিৎসা সেবা নিচ্ছেন।
জ্বরে আক্রান্ত কবির মামুদ এলাকার গোলাম মোস্তফা (৬৫) জানান, গত এক মাস ধওে জ্বরে ভুকছেন। এতোদিন বাড়ীতে চিকিৎসা নিয়েও জ্বর নিয়ন্ত্রণ না হওয়ার গত পাঁচ দিন আগেই হাসপাতালে ভর্তি হন।বিভিন্ন পরীক্ষা- নিরীক্ষা কওে তার টাইফয়েড ধরা পড়েছে।
বর্তমানে তিনি কিছুটা সুস্থ রোধ করছেন। একই এলাকার জ্বরে আক্রান্ত সাদিয়া আক্তার শাম্মীর বাবা জানান, তার মেয়ের গত কয়েকদিন ধরে জ্বর-সর্দি।
গত সোমবার গভীর রাতে জ্বর-১০২ ডিগ্রী তাপমাত্রা দেখা দেওয়ায় সেই রাতেই তার মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এখন তার মেয়ের কিছুটা জ্বর নিয়ন্ত্রণ হয়েছে বলে তিনি জানান।
উপজেলার চন্দ্রখানা গ্রামের কৃষ্ণ রঞ্জন রায় জানান, তার মেয়ে চারদিন থেকে জরে আক্রান্ত। তিনি তার মেয়েকে হাসপাতলে নিয়ে না আসলেও এমবিএিস ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন বলে তিনি জানান। তিনি আরও জানান শুধু তার মেয়ে জ্বরে আক্রান্ত নন। তার এলাকায় প্রতিটি পরিবারে কম বেশি দুই থেকে তিন জন জ্বর- সর্দিতে আক্রান্ত।
বালারহাট বাজারের পল্লী চিকিৎসক ইয়াকুব আলী ও মিঠুন চন্দ্র রায় জানান, বর্তমানে তার এলাকার অধিকাংশ পরিবারে জ্বর,সর্দির প্রকোপ দেখা দিয়েছে।গত এক সপ্তাহে শিশু-বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সের প্রায় শতাধিক জ্বরে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন বলে তারা জানান।
বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে জানিয়েছেন। তারা আরও জানান জ্বরের প্রকোপ দেখা দেওয়ায় ফার্মেসি গুলোতে ওষুধ সংকট রয়েছেও বলে জানান তারা।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবুহেনা মোস্তফা কামাল জানান, সারাদেশের মতো এ উপজেলায়ও জ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এতে ভয়ের কিছু নেই।
সাথে টাইফয়েডের প্রভাব পড়বে না বলে তিনি জানান। বাড়ীতে থাকা রোগীর জ্বর বৃদ্ধি পেলে তাৎক্ষনিক ফুলবাড়ী হাসপাতালে এসে চিকিৎসা সেবার জন্য পরামর্শ দেন তিনি।
+ There are no comments
Add yours