স্মরণ ও শ্রদ্ধা: জাতীয় প্রেসক্লাবের প্রথম সভাপতি মুজীবুর রহমান খাঁ’র ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী ৫ অক্টোবর
জাতীয় প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাংবাদিক ও সাহিত্যিক মুজীবুর রহমান খাঁ ১৯১০ সালের ২৩ অক্টোবর নেত্রকোনার উলুয়াটি গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন এবং ১৯৮৪ সালের ৫ অক্টোবর ঢাকায় তাঁর মৃত্যু হয়।
তিনি স্থানীয় আঞ্জুমান হাইস্কুল থেকে এন্ট্রান্স (১৯২৮) এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে বি.এ (১৯৩৪) পাস করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে এম.এ শ্রেণিতে ভর্তি হন। কিন্তু কিছুদিন পর বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করে চবিবশ পরগনার হারুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করেন। এর পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতাও শুরু করেন। তিনি প্রথমে দৈনিক আজাদ পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক (১৯৩৬-৩৯) এবং পরে যুগ্মসম্পাদক (১৯৩৯-৬৫) হন।
পরে তিনি সাপ্তাহিক কমরেড (কলকাতা), মাসিক মোহাম্মদী (ঢাকা) ও দৈনিক পয়গাম-এর সম্পাদক (১৯৬৫-৭১) এবং স্বাধীনতা-উত্তরকালে আজাদ পত্রিকার সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি হন। মুজীবুর রহমান খাঁ বিভিন্ন সামাজিক, সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।
তিনি অল বেঙ্গল অ্যান্টিফ্যাসিস্ট রাইটার্স গিল্ডের প্রতিষ্ঠাতা সহসভাপতি, বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির (১৯৪৪) সম্পাদক, ভারতের প্রথম গণপরিষদের নির্বাচিত সদস্য (১৯৪৬), পূর্ব পাকিস্তান রেনেসাঁ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক (১৯৫৪), পাকিস্তান আর্টস কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক এবং বুলবুল ললিতকলা একাডেমীর সহসভাপতিরূপে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি আলাপন সাহিত্য গোষ্ঠী(১৯৭৬) ও জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার(১৯৮২) প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন। মুজীবুর রহমান খাঁ সাহিত্য, ইতিহাস, জীবনী ইত্যাদি বিষয়ে লেখালেখি করেছেন। বিলাতে প্রথম ভারতবাসী (১৯৩৯) গ্রন্থে তিনি বিলাত সম্পর্কে ভারতীয়দের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তাঁর অন্যান্য রচনা হচ্ছে: পাকিস্তান (১৯৪২), সাহিত্যের সীমানা (১৯৬৭), সাহিত্য ও সাহিত্যিক (১৯৭১), মহানবী (১৯৮০), আমাদের ইতিহাস, সাহিত্যের বুনিয়াদ ইত্যাদি।
সাহিত্য ও সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য তিনি পাকিস্তান সরকারের ‘সেতারা-ই-কায়েদে আজম’ এবং বাংলাদেশ সরকারের ‘একুশে পদক’ (১৯৮০) লাভ করেন। ১৯৮৪ সালের ৫ অক্টোবর ঢাকায় তাঁর মৃত্যু হয়।
লেখকঃ সাবরিন জেরিন
+ There are no comments
Add yours