মোঃ জয়নাল আবেদীন,সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি:
বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌরসভার বাসিন্দারা বর্ষা আতংকে দিন কাটাচ্ছেন।বর্ষাকালে সীমাহীন দুর্ভোগের কথা মনে পড়লে তাদের মধ্যে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।আর এসব ভীতির পেছনে রয়েছে বেশ কিছু কারণ। সীতাকুণ্ড পৌরসভার ০৯ টি ওয়ার্ডের বর্ষাকালের পূর্ব চিত্র দেখলে যে কারো চোখ ছানাবড়া হয়ে যাওয়ার মত।এখানে সামান্য বৃষ্টি হলেই সীতাকুণ্ডের শেখপাড়া,ইদিলপুর,শিবপুর ও আমিরাবাদ ওয়ার্ড বন্যার রুপ ধারণ করে।
বর্ষাকালে প্রত্যেক ওয়ার্ডের জনসাধারণের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়।দীর্ঘদিনের এই সমস্যার কয়েকটি কারণ হচ্ছে খাল দখল করে রাখা,ময়লা আবর্জনার স্তূপ ফেলা,খাল পুর্ন খনন ও সংস্কার না করা।এছাড়া আরো কয়েকটি অন্যতম কারণ উল্লেখ করা যায় যেসব কারণে বর্ষাকালে গ্রামবাসী পানিবন্দি হয়ে থাকে।অকেজো স্লুইস গেট ও জলাশয় ভরাট করে বিভিন্ন দোকানপাট নির্মাণ করে পানি প্রবাহের বাঁধার সম্মুখীন হলে সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে।দখলে দূষনে খাল(ছড়া) সংকীর্ণ হয়ে পড়ায় পানি প্রবাহে চরম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়।সীতাকুণ্ড পৌরসভার ৯ টি ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতার কারণে জনদুর্ভোগ নতুন কিছু নয়।ভোগান্তির দীর্ঘ সময় পেরুলেও জলাবদ্ধতা নিরসনে তেমন কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নেই বললেই চলে।সরেজমিনে গিয়ে খবর বাংলা 24 এর প্রতিনিধি স্বচক্ষে দেখতে পান দোকান নির্মাণের জন্য মাটি ভরাট করে খাল সংকীর্ণ করে রাখা হয়েছে।এছাড়া ময়লা আবর্জনার স্তূপ করে রাখাই ধীরে ধীরে খাল বিলুপ্ত হতে চলেছে।একি চিত্র উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নেও দেখা মেলে।
স্থানীয়রা জানান,বর্ষাকালে সামান্য বৃষ্টি হলেই আমরা পানিবন্দি হয়ে পড়ি।এতে করে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের স্বাভাবিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়।প্রতি বছর জলাবদ্ধতার কারণে চরম সমস্যার মধ্যে দিয়ে আমরা দিন পার করি। দুর্ভোগ হতে পরিত্রান পেতে আমাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।এছাড়া ছড়ার মধ্যে ময়লা আবর্জনা ফেলা বন্ধ করতে হবে।কেননা এতে খাল ধীরে ধীরে সংকীর্ণ হয়ে যায় এবং এক পর্যায়ে দখলে চলে যায়।স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আমাদের অনুরোধ যাতে জলাবদ্ধতার এই সমস্যাটি স্থায়ীভাবে সমাধান করা হয়।কেননা জলাবদ্ধতার পেছনে আরো অনেক কারণ রয়েছে।ভারী বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলের কারণে ফসলি জমি ডুবে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।এসব ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব যদি জনপ্রতিনিধিরা গাফিলতি না করে,পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে এবং সমস্যার স্থায়ী সমাধান করে।চারটি ছড়ার পানি আমাদের দক্ষিণ ইদিলপুর ছড়া দিয়ে যায়।যদি এই ছড়াটি পুর্ন খনন না করে তাহলে স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রী থেকে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়বে।
খাল দখল করে দোকান নির্মাণের বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে কিনা খবর বাংলা প্রতিনিধি সহকারী কমিশনার ভূমি আশরাফুল আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,কারা খাল দখল করছে?এই ধরনের তথ্য যদি থাকে সরাসরি আমার কাছে চলে আসুন।এসময় তিনি বলেন যদি খাল দখলের কোন তথ্য প্রমান থাকে তাহলে তাকে পাঠানোর জন্য বলেন।
খাল পুর্নখনন ও জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানের বিষয়ে সীতাকুণ্ড পৌর মেয়রের কাছে জানতে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে মুঠোফোন একাধিকবার যোগাযোগ করলেও পাওয়া যায়নি তাকে।
বর্ষাকালে জলাবদ্ধতার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ মফিজুর রহমান বলেন,অসচেতনভাবে ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে খাল ভরাট হয়ে যায়।এছাড়া খাল পুর্নখনন ও জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধানে আমরা ও উপজেলা প্রশাসন এই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।দোকান নির্মাণের জন্য মাটি ভরাট করে খাল দখলের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি জানেন না বলে জানান।তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন।
+ There are no comments
Add yours