লামায় কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবায় মুগ্ধ ফাইতংয়ের মানুষ

Estimated read time 1 min read
Ad1

নিজস্ব প্রতিবেদক :

বান্দরবানের লামায় পাহাড়ের মধ্যেই প্রত্যন্ত অঞ্চলের রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছিলেন কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মীরা।

অন্য সময়ের চেয়ে এখন ক্লিনিকে রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে অনেক বেশি।

পূর্বেই করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে উপজেলা ও জেলা হাসপাতালে না গিয়ে স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ায় খুশি স্থানীয়রা।

স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে নতুন অধ্যায় হিসেবে দেখছেন অনেকে।

লামা উপজেলায় সর্বমোট ২৮টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে।

এসব ক্লিনিকের বেশিরভাগই প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত।

২বছর ধরে করোনাকালীন প্রতি ক্লিনিকে নিরাপত্তাসামগ্রী পিপিই মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হ্যান্ড গ্লাভস দিয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

No description available.

রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে।

যদিও ৩১ প্রকারের ওষুধ দেওয়ার কথা থাকলেও সরবরাহ আছে ২৭ প্রকারের ওষুধ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশ মতে, সপ্তাহে ৬দিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার নিয়মিত সেবা দিচ্ছেন।

এছাড়া একজন স্বাস্থ্য সহকারী ও মাঠ পর্যায়ে কাজের জন্য নিযুক্ত ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার অ্যাসিসটেন্ট সপ্তাহে ৩ দিন করে ক্লিনিকগুলোতে সেবা দিচ্ছেন।

লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড সুতাবাদী পাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার জয়তুন নেছা বলেন,

এখন পর্যন্ত ফাইতং ৮হাজার জনসাধারণ কে করোনা টিকা দেওয়া হয়।

করোনা সংক্রমণের আশঙ্কার মধ্যেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তৃণমূল জনসাধারণকে নিয়মিত সেবা প্রদান করছি।

প্রায়ই কিছু রোগী আসেন, যাদের সমস্যার সঙ্গে করোনা সংক্রমণের উপসর্গের অনেকটা মিল থাকে।

ফলে আগে করোনা আক্রান্ত রোগী হলেও তা নির্ধারণ করা আমাদের পক্ষে কঠিন হয়।

ক্লিনিকে আগত রোগীদের আমরা সচেতনতার পরামর্শ দিয়ে থাকি।

সুরক্ষাসামগ্রী ব্যবহারের মাধ্যমে যতটা সম্ভব নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে সেবা দিয়েছি। আগের থেকে রোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে।

ফাইতং ইউনিয়ন এখনো আজিজনগর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড হিসাবে কার্যক্রম চলে, ইউনিয়নের মর্যাদা পেলে সেবার মান আরো বৃদ্ধি পাবে।

চিউবতলী বাজার,বড় মুসলিম পাড়া,রোয়াজপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার কর্মীরা’সহ ফাইতং স্বাস্থ্য সহকারী, মহিউদ্দিন বলেন, করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর থেকে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা শিশু ও গর্ভবতীসহ নানা ধরনের রোগীর সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

সাধারণ মৌসুমি জ্বর, সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা, পেট ব্যথা, মাথা ব্যথা, বমি ও পাতলা পায়খানা এ ধরনের সমস্যা নিয়ে রোগীরা আসেন আমাদের কাছে।

আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করি তাদের সেবা দেওয়ার। বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যেও আমাদের ক্লিনিকে রোগী বৃদ্ধি পাচ্ছে।

(১৭মে) মঙ্গলবার,বুধবার,বৃহস্পতিবার থেকে ফাইতং,আজিজ নগর,রুপসী পাড়া সহ প্রত্যেক ইউনিয়নে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা নিতে আসা ফাতেমা বেগম, শাহেদা ইয়াসমিন, নুরুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম (খোকন) বলেন, দূরদূরান্ত কারণে হাসপাতালে যেতে পারি না।

ঠান্ডা গরমের জন্য জ্বর মাথা ব্যথা নিয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকে আসছি। এখানে ডাক্তার দেখলাম। প্রেসার এবং ওজন মেপে ওষুধ দিলো, চলে আসলাম।

গ্রামের অনেকেই এখানে আসেন। বিভিন্ন কমিউনিটি ক্লিনিক সেবা নিতে আসা আরও কয়েকজন বলেন, দূরদূরান্ত জন্য কোথাও যেতে পারি না।

কিন্তু স্বাভাবিক রোগ তো আর আমাদের মুক্তি দিচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকে আসি। এখানের ডাক্তাররা আগের থেকে ভালো সেবা দিচ্ছে এখন।

বর্তমানে বিনামূল্যে ওষুধও দেয় কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে। এ ধারা অব্যাহত রাখার দাবি জানান তারা।

সেবা পাওয়া আরো অনেকে জানান, ক্লিনিক না থাকলে স্বাস্থ্যসেবা পেতে তাদের অনেক দূরে যেতে হতো, যাতে সময় ও অর্থ ব্যয় হতো এবং দুর্ভোগও বাড়তো।

কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে জ্বর, সর্দি, কাশি, আমাশয়, কাটা, পোড়া, গ্যাস্ট্রিক, এলার্জি, ওজন মাপা, প্রেসার মাপা, ইত্যাদি সমস্যার সেবা পেয়ে থাকি।

উপজেলা সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক আজিজনগর নিরুপা আসাম, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ফাইতং ,আমজাদ হোসেন চৌধুরী’দের মাধ্যমে জানা যায়,

বর্তমানে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে প্রদেয় উল্লেখযোগ্য সেবাসমূহ হলো, মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্য পরিচর্যা, শিশু রোগের সমন্বিত চিকিৎসা সেবা,

স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ে পরামর্শ প্রদান, ইপিআই এবং এআরআই সেবা, সাধারণ রোগ ও জখমের চিকিৎসা, সদ্য প্রসূতি মা,

মারাত্মক পুষ্টিহীন ও দীর্ঘ মেয়াদী ডায়রিয়া এবং হামে আক্রান্ত শিশুদের ভিটামিন এ ক্যাপসুল প্রদান,

শারিরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধীদের শনাক্ত ও রেফার করা, কিশোর কিশোরীদের স্বাস্থ্যশিক্ষা, জরুরি ও জটিল রোগী উচ্চতর পর্যায়ে রেফারেল মাধ্যমে কার্যকরী রেফারেন্স পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করা,

প্রজনন স্বাস্থ্য ও নিরাপদ মাতৃত্ব সেবা, পুষ্টি শিক্ষা ও সম্পূরক অণুপুষ্টি প্রদান, বয়ষ্কদের লক্ষণ ভিত্তিক চিকিৎসা ও পরামর্শ প্রদান,

পূর্বেই কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ সুরক্ষা বিষয়ক পালনীয় বার্তা সম্পর্কে স্বাস্থ্যশিক্ষা বিষয়ক সেবা দেওয়া হয়।

লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শক ( ইনচার্জ) দিদারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, উপজেলায় ২৮টি কমিউনিটি ক্লিনিক আছে ২৮টি ক্লিনিকের সিএইচসিপিকে করোনা কালীন সময় করোনা সংক্রমণ থেকে সুরক্ষার জন্য আমরা পিপিই, মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়েছি।

শরীর থেকে স্যাম্পল গ্রহণের উপর একদিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল সিএইচসিপিদের। করোনাভাইরাসের এই সংকটময় মুহূর্তে উপজেলার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো নিরবচ্ছিন্নভাবে তৃণমূল মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছিলেন।

আমরা সিএইচসিপিদের সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের সক্ষমতা হাজার ও বৃদ্ধির চেষ্টা করি।

নিজস্ব প্রতিবেদক https://khoborbangla24.net

বিশ্বজুড়ে দেশের খবর

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours