নুরুল আবছার নূরী, ফটিকছড়ি:::
ফটিকছড়িতে বালুমহাল ইজারা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে একটা রমরমা বাণিজ্য হর হামেশাই চলে আসছে।
তমধ্যে আবার বিগত চার-পাঁচ বছর ধরে লেলাং এর গোপালঘাট্টা মৌজার পোট্টাপোল বালু মহাল, ফেনুয়া বালুমহাল, সন্যাসীর হাট বালু মহাল,
লালপোল বালু মহাল, ফিঙ্গের পোল বালু মহাল ও দমদমা বালু মহাল ইজারাতে আসেনি।
কোনো এক রহস্যজনক কারণে এসব বালু মহালের নাম বছরের পর বছর ইজারাতে আসেনা। এতে করে সরকারও বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে।
তবে তাতে ইজারাদারদের কোনো সমস্যা হয়না, তারা কাঞ্চননগর ইউপির বালু মহাল গুলো নামমাত্র মুল্যে ইজারা নিয়ে
লেলাং ইউনিয়নের বালুও বিনা ইজারাতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে তুলে নিচ্ছে।
আমাদের একটি টিম গতকাল লেলাং ইউনিয়নের পোট্টাপোল ও ফেনুয়া বালুমহাল পরিদর্শনে গেলে এসব বালুমহাল থেকে সম্পুর্ণ অবৈধ ও ইজারা বিহীন ভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করতে দেখা যায়।
বালু উত্তোলনরত লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় যে এসব বালু কাঞ্চননগর ইউপির ইজাদার মাষ্টার মোরশেদ, মহিউদ্দীন,
আকতার, দৌলত, আবছার সহ ১২জন এবং ফটিকছড়ি পৌরসভার বিশিষ্ট চাঁদাবাজ, টানা কাম্মো সিরাইজ্জে (প্রকাশ কালা সিরাজের) নেতৃত্বে উত্তোলন করা হচ্ছে।
যে সমস্ত বালু মহাল ইজারা নিয়েছে সেগুলোতে নৌকায় করে তাবা ও বেলচা দিয়ে বালু উত্তোলনের শর্ত উল্লেখ থাকলেও ইজারাদার মাষ্টার মোরশেদ,
মহিনউদ্দীন, আকতার, দৌলত, আবছার গংরা ফুলতল স’মিল এলাকার পেতি মাস্তান, বিশিষ্ট গাড়ি চোর, কুখ্যাত চাঁদাবাজ,
ভুমিদস্যু সিরাইজ্জে (প্রকাশ কালা সিরাজ) কে পার্টনার বানিয়ে এসব বালু মহালের বালু প্রতিনিয়ত ড্রেজার মেশিন বসিয়ে তুলে নিচ্ছে।
এভাবে বছরের পর বছর বিনা ইজারায় লেলাং ইউপির বালু মহালগুলো থেকে বালু তুলে চলছে অবৈধ বালুর রমরমা বাণিজ্য।
এখানে উল্লেখিত মাষ্টার মোরশেদ আবার নাজিরহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের টিচার।
তারা এসব বালু মহাল থেকে বিপুল পরিমানে বালু উত্তোলন করে জীপ, ডাম্পট্রাক ও ট্রাক্টর বোঝাই করে বিভিন্ন এলাকায় সাপ্লাই করতেছে।
সাপ্লাইকৃত এসব বালু থেকে লব্দকৃত অর্থ মাষ্টার মোরশেদ ও কালা সিরাজগংদের মাঝে সমঅংশে ভাগ বন্টন হয়।
এখানের একটা অংশ আবার থানা পুলিশকে ম্যানেজ করার নামে কালা সিরাজ আলাদাভাবে নিয়ে নেয়।
এদিকে এসব বালু মহাল থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তোলার কারণে অনেক কৃ্ষকের চাষের জমি লেলাং খালে তলিয়ে গেছে।
বড় বড় ডাম্প ট্রাক ও ট্রাক্টর দিয়ে বালু পরিবহনের ফলে কাঞ্চন নগর থেকে ফেনুয়া চা-বাগান রোড ও চা-বাগান থেকে,
বিবিরহাট বাজার রোড এবং চা-বাগান থেকে সন্যাসীর হাট হয়ে লেলাং ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার কাঁচা পাকা রাস্তাগুলো ভেঙ্গেচুড়ে একাকার হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে এলাকার ভুক্তভোগী কৃষক ও জনগন ফটিকছড়ি ভুমি অফিস ও তহশীল অফিসে বেশ কয়েকবার অভিযোগ করে।
কৃষকের এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে গতকাল ফটিকছড়ি ভুমি অফিস, চাড়ালিয়াহাট ভুমি অফিস ও তহশীল অফিস থেকে কর্মকর্তারা গিয়ে ঘটনার সত্যতা পায়।
তহশীল অফিস ও ভুমি অফিসের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল লেলাং এর ফেনুয়া ডিভিশনের পোট্টাপোল এলাকায় গিয়ে বালু উত্তোলনরত অবস্থায় তিন স্পটে তিনটি ড্রেজার মেশিন দেখতে পায়।
উপস্থিত লোকজন কে জিজ্ঞেস করলে তারা ফুলতল স’মিল এলাকার রশিদ্যার পোয়া সন্ত্রাসী সিরাইজ্জের কথায় বালু তুলতেছে বলে জানায়।
তারা আরও জানায় যে সিরাইজ্জেকে চাঁদা দিয়ে দিয়েই তারা বালু তুলতেছে। তহশীল অফিসের লোকজন ড্রেজার মেশিনগুলো জব্দ করে নিয়ে আসার পথে মাষ্টার মোরশেদ, মহিউদ্দীন, ও কালা সিরাজের নেতৃত্বে দক্ষিন কাঞ্চন নগর এলাকার একদল মানুষ দা ছুরি বটি অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়।
তহশীল অফিসার ও চাড়ালিয়াহাট ভুমি অফিসের লোকজন দ্রুততার সাথে থানায় ফোন করে ঘটনার আদ্যোপান্ত জানালে থানা থেকে তৎজলদি পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়।
পুলিশ থানা থেকে ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পৌঁছতেই সন্ত্রাসী সিরাইজ্জের সাঙ্গপাঙ্গ, মাষ্টার মোরশেদ, দৌলত, আবছার ও অন্যান্যরা তাদের কাছ থেকে জব্দকৃত ড্রেজার মেশিন, পাইফ, মেশিনের যন্ত্রপাতি কেড়ে নিয়ে দ্রুত কেটে পড়ে।
পুলিশ গিয়ে সন্ত্রাসীদের কবল থেকে তহশীল অফিসের লোকজন ও ভুমি অফিসের লোকজনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
এই ঘটনায় এলাকার ভুক্তভোগী চাষী ও ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে এহেন সন্ত্রাসী ঘটনার বিচার দাবী করে।
তারা উল্লেখিত রাস্তাগুলো দিয়ে অবৈধ বালুর ব্যবসা করতে দেবেনা বলে ঘোষনা করে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
+ There are no comments
Add yours