আজিজুল হক চৌধুরীঃ
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী কর্ণফুলি নদীর উপর কালুরঘাট সেতু নির্মাণ কাজের সকল বাধা দূর হয়েছে বলে জানান রেলমন্ত্রী মোঃ নূরুল ইসলাম সুজন। তিনি বলেন, কালুরঘাট সেতুর ডিজাইন শেষ পর্যায়ে রয়েছে এবং দক্ষিণ কোরিয়া অর্থায়নেও রাজি হয়েছে। মাঝখানে তারা সরে গিয়েছিল। এখন তারা আবার অর্থায়নের ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছে।
বাস্তবায়নাধীন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে এসে সাংবাদিকদের কাছে ব্রিফিংকালে রেলমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী আরো জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করে ঢাকা হতে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল চালু করতে পারব বলে আমার বিশ্বাস। রেলমন্ত্রী বলেন, দোহাজারী-কক্সবাজার পর্যন্ত যদি সুবিধা পেতে হয় তাহলে কালুরঘাট ব্রিজ এবং চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত রেলপথ মিটারগেজের পরিবর্তে ব্রডগেজে রূপান্তর করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার যে ১০টি মেগা প্রকল্প রয়েছে তার মধ্যে রেলওয়ের ২টি প্রজেক্ট রয়েছে। এর একটি দোহাজারী-কক্সবাজার-ঘুমধুম পর্যন্ত ১০২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ। অপরটি ঢাকার কমলাপুর থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ।
করোনার কারণে প্রকল্পটির কার্যক্রম একেবারে বন্ধ হয়নি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনের যতগুলো ব্রিজ-কালভার্ট আছে তার ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। মাঠের কাজ প্রায় ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে। সার্বিক অগ্রগতি ৪৫ শতাংশের মতো।
প্রকল্প কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মাঠের কাজ ২০২১ সালের মার্চ মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে। আমার বিশ্বাস, স্টেশন বিল্ডিং, প্লাটফরম, সিগন্যালিং সিস্টেমসহ সম্পূর্ণ কাজ এক বছরের মধ্যে শেষ হবে।
এসময় সাংবাদিকরা মন্ত্রীকে জানান, কালুরঘাট সেতুতে ওজন স্কেল বাসানোর কথা থাকলেও বসানো হয়নি। রেলওয়ের শাহ আমানত সুপার মার্কেট এক বছরের জন্য লিজ নিয়ে স্থায়ী কাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে।
জবাবে মন্ত্রী বলেন, কালুরঘাট সেতুতে ওজন স্কেল বসাতে হবে। আর রেলওয়ের শাহ আমানত সুপার মার্কেটের যে জমি সেটা আমরা এক বছরের জন্য লিজ দিয়েছি। এক বছরের লিজের কথা জেনেও যারা দোকান নিচ্ছে সেটা তাদের বিষয়। আমাদের কোনো বিষয় নেই।
এর আগে মন্ত্রী দুদিনের সফরে শুক্রবার সকালে কক্সবাজার যান। বিকালে দোহাজারী-কক্সবাজার ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা করেন। গতকাল রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প কাজের অগ্রগতি সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে সন্ধ্যায় সড়কপথে চট্টগ্রাম আসেন। প্রকল্পটি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে।
এসময় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) সরদার সাহাদাত আলী, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. সবুক্তগীন, প্রকল্প পরিচালক মো. মফিজুর রহমানসহ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
+ There are no comments
Add yours