খবর ডেস্ক:
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, যানজট মুক্ত, পরিচ্ছন্ন সুন্দর ও সুশৃঙ্খল নগরী গড়তে চট্টগ্রাম ট্রাফিক বিভাগ ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন যৌথ উদ্যোগে কাজ করবে। চট্টগ্রাম নগরীকে নিরাপদ ও বাসযোগ্য করে গড়ে তোলাই তাদের প্রধান লক্ষ্য।
আজ সিএমপি ট্রাফিক বিভাগের সাথে যানজট নিরসনে চসিক নগর ভবনের কনফারেন্সরুমে এক বৈঠকে প্রশাসক এসব কথা বলেন।
এসময় চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, সচিব আবু শাহেদ চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল সোহেল আহমেদ, প্রশাসকের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ এ. কে. এম. রেজাউল করিম, ডিসি ট্রাফিক দক্ষিণ মোঃ শহিদুল্লাহ, ডিসি ট্রাফিক পশ্চিম জয়নুল আবেদীন, এডিসি ট্রাফিক উত্তর উক্য সিং,এডিসি ট্রাফিক বন্দর অলক বিশ্বাস, এডিসি ট্রাফিক পশ্চিম সিএমপি ছত্রধর ত্রিপুরা, স্থপতি আবদুল্লাহ ওমর উপস্থিত ছিলেন।
প্রশাসক বলেন, চট্টগ্রাম দ্রুত বর্ধমান একটি নগর, যেখানে বিবিধ উন্নয়ন ও পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে। দেশের সব প্রান্ত থেকে মানুষ বিবিধ প্রয়োজনে ছুটছে বন্দর নগরী অভিমুখে, বাড়িয়ে তুলছে নগরীর জনসংখ্যাকে। এ অতিরিক্ত জনসংখ্যা নগরীতে নানা কৃত্রিম সমস্যার সৃষ্টি করছে। এর মধ্যে অন্যতম যানজট। যানজট সৃষ্টিতে রাস্তার মোড়ে গাড়ি দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা, সড়কে বিভিন্ন গতির ও অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল করা, ট্রাফিক আইন অমান্য করা, আইন প্রয়োগ ও কার্যকরের অভাব, অপর্যাপ্ত ও অপরিকল্পিত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, পর্যাপ্ত ট্রাফিক পুলিশের অভাব, সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়া, লাইসেন্সবিহীন ও অদক্ষ চালক, রাস্তা ও ফুটপাত দখল, অবৈধ রিকশার ছড়াছড়ি, যানবাহনের ইচ্ছামতো চলাচল, যত্রতত্র পার্কিং ও আইন মেনে না চলা, ফুটপাতগুলো দখল, সড়কে নির্মাণসামগ্রী ফেলে রাখা প্রধান প্রধান কারণ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এছাড়া অপরিকল্পিভাবে রাস্তা কেটে উন্নয়ন কাজ করা, মোড়ে মোড়ে রিকশা দাঁড়িয়ে থাকা, সড়কের পাশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবস্থান, ত্রুটিযুক্ত যানবাহন ও দিনে সড়কে বড় ট্রাক চলাচল করাই মুলত দায়ী বলে প্রশাসক উল্লেখ করেন। নগরীতে অপরিকল্পিত বাসস্ট্যান্ডের কারণে নগরীর চার প্রবেশমুখ কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, নগরীর অক্সিজেন মোড়, শাহ আমানত সেতু চত্বর, কাপ্তাই রাস্তার মাথা এবং সিটি গেট-কর্নেল হাটে যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বেশিরভাগ সড়কের দুই পাশের ফুটপাত দখল করে চলছে ব্যবসা-বাণিজ্য। যত্রতত্র যানবাহন দাঁড়িয়ে থেকে যাত্রী উঠা-নামা করানোর কারণে প্রতিটি মোড়েই এক ধরনের বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। তিনি আরো বলেন, গাড়ির সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, সেভাবে সড়ক বাড়েনি। চালকদের মধ্যে সচেতনতাও বাড়েনি। পরিকল্পিতভাবে টার্মিনালও গড়ে তোলা হয়নি। তিনি শিঘ্রই নগরীতে প্যাডেল চালিত অবৈধ রিক্সা উচ্ছেদ করে রিক্সা চলাচলের জন্য নির্দিষ্ট এরিয়া ঠিক করে দেওয়া হবে বলে জানান।
সমাজের বিভিন্ন সচেতন মহল যদি শহরের উন্নয়ন মূলক কার্যক্রমে একাজে এগিয়ে আসেন তা হলে এ শহরে চিত্র বদলাতে সময় নেবে না বলে উল্লেখ করে প্রশাসক। সিএমপি ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে যানজট নিরসনে কিছু প্রস্তাবনা লিখিতভাবে প্রশাসক এর নিকট দেন।
প্রশাসক এ ব্যাপারে একমত হয়ে এক সাথে কাজ করার পরিকল্পনার কথা জানান। নগরীর ফুটপাতে যেন হকাররা যত্রতত্র বসতে না পারে এবং স্থায়ী কোন স্থাপনা তৈরী করতে না পারে সে দিকে নজর রাখার তাগাদা দেন প্রশাসক। এছাড়া রাস্তায় জেব্রা ক্রসিং ও রোড় মার্কিং করা, নগরীর বিভিন্ন মোড়ে ফুটওভার ব্রিজ স্থাপন করা, যাত্রী উঠানামার স্থান নির্দিষ্ট করার বিষয়ের উপর জোর দেয়ার আহবান জানান প্রশাসক। বৈঠকে করোনা মহামারিকালে যে সকল পুলিশ সদস্য মৃত্যু বরণ করেছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বলেন করোনাকালে তাদের ভূমিকা জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ রাখবে।
+ There are no comments
Add yours