কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা নারায়ণগঞ্জগামী ঈগল পরিবহনের চলন্ত বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডাকাতির ঘটনার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) সরকার মোহাম্মদ কায়সার।
বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের ওই ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানান।
তিনি জানান, এ ঘটনায় ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়। পরে রাজা মিয়া নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাজা মিয়া টাঙ্গাইল থেকে ঢাকাগামী ঝটিকা পরিবহনের চালক ছিল। ডাকাতিতে যারা অংশগ্রহণ করেছে সে তাদের নাম বলেছে। ডাকাত দলের সদস্য শুধু ডাকাতিই করেনি, তারা বাসের একজন নারী যাত্রীকে ধর্ষণও করেছে।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে ঈগল এক্সপ্রেসের বাসটি গত মঙ্গলবার (২ আগস্ট) রাতে নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে যাত্রা করে। রাত ১১টা ১০ মিনিটে সিরাজগঞ্জের রোড এলাকায় রাতের খাবারের জন্য ২০ মিনিটের বিরতি দেয়।
বিরতি শেষে পুনরায় বাসটি যাত্রা শুরু করে। যাত্রা করার ৫ মিনিট পর ৪ জন যাত্রী সংকেত দিলে তাদের বাসে তোলা হয়। ওই চারজনকে তুলে নিয়ে বাস চলতে থাকে। প্রায় ৫ মিনিট পর আবার ৩ জন যাত্রী সংকেত দেয় এবং বাসে ওঠে। এরপর আরও ৩ জন যাত্রী একইভাবে বাসে ওঠে। ওই ১০ জনই ছিল সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্য।
ওই ১০ জন ওঠার পর বাসটি চলতে থাকে। বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের নাটিয়াপাড়া পার হওয়ার পর ডাকাত দলের তিনজন চালকের আসন থেকে ড্রাইভারকে তুলে দিয়ে ডাকাত দলের একজনকে গাড়ির চালকের আসনে বসানো হয়।
ডাকাত দলের ওই চালক বাসটি ঢাকার দিকে যাওয়ার সময় মহাসড়কের গোড়াই এলাকায় ওভারপাসের ওপর দিয়ে না গিয়ে নিচ দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে টাঙ্গাইলের দিকে নিয়ে আসে। এর মধ্যে ডাকাত দলের বাকি ৯ জন গাড়ির সিটে দাঁড়িয়ে দেশীয় অস্ত্র হাতে নিয়ে যাত্রীদের জিম্মি করে ফেলে। এ সময় পুরুষ যাত্রীদের পোশাক খুলে তাদের হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলে।
নারী যাত্রীদের বাসের পর্দা এবং সিটের কাভার খুলে তাদেরও মুখ-হাত-পা বেঁধে টাকা-পয়সা, মোবাইল, স্বর্ণালঙ্কারসহ যাবতীয় জিনিসপত্র নিয়ে নেয়। পরে টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা এবং কালিহাতী রোড হয়ে মধুপুরের দিকে যেতে থাকে।
রাত ৩টা ২৫ মিনিটে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ-জামালপুর সড়কের মধুপুর-ঘাটাইল সীমান্তবর্তী এলাকার রক্তিপাড়ায় ডাকাত দলের সদস্যরা একজন একজন করে নেমে যায়। পরে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে সড়কের এক পাশে হেলে যায়।
এ ঘটনায় ৬ জন ডাকাত মিলে ওই নারীকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার ওই নারীর দেওয়া তথ্য এবং আসামির কথার মধ্যে ঘটনার মিল পাওয়া গেছে। ওই আসামি ঘটনার বর্ণনা ও অপরাধের কথা স্বীকার করেছে।
+ There are no comments
Add yours