জন্ম নিবন্ধন সনদ ইস্যু না করলে জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার স্বাক্ষরিত সম্প্রতি এক চিঠিতে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ুন কবীরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, তথ্য সংগ্রহ হালনাগাদ কার্যক্রমে কোনো জনপ্রতিনিধি আবেদনকারীর জন্ম নিবন্ধন সনদ ইস্যু না করলে বা হয়রানি করলে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধির তথ্য এনআইডির মহাপরিচালককে লিখিতভাবে জানাতে হবে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ বরাবর পত্র প্রেরণ করতে হবে। এছাড়া সকল আঞ্চলিক কর্মকর্তাকে এ নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালানোরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বরিশালের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জানান, অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রাপ্যতায় সমস্যা হওয়ায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। রংপুরের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জানান, প্রথম পর্যায়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণ কার্যক্রমে অনলাইন জন্ম সনদ পেতে সমস্যা হলেও স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধির সঙ্গে সভা করে বর্তমানে তা সমাধান করা হয়েছে।
ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জানান যে, সাভার ও গাজীপুর এলাকার জনপ্রতিনিধিরা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। কোনো কোনো উপজেলায় প্রাক্কলিত ভোটারের তুলনায় ভোটার হওয়ার হার অনেক কম হচ্ছে। এসব বিষয় উঠে আসায় সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভোটার তালিকা প্রণয়ন আইন অনুযায়ী, ফরম-২ এ জন্ম সনদ নম্বর দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে অবশ্যিকভাবে একজন নাগরিকের জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রয়োজন। কিন্তু ভোটার হতে ইচ্ছুক অনেককেই নানাভাবে ঘোরানো হয়।
শিক্ষা সনদ, বাড়ি ভাড়ার রশিদসহ অন্যান্য কাগজপত্র থাকার পরও ভোগান্তিতে পড়েন অনেকে। এ অবস্থায় ভুক্তভোগীরা জন্ম সনদ ছাড়াই ভোটার হাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা বা থানা নির্বাচন কার্যালয়ে যান। কিন্তু সুযোগ না থাকায় ইসির মাঠ কর্মকর্তারাও অপারগতা জানান। আইনে জন্ম সনদের উল্লেখ থাকায়, সেটা ছাড়া তারা কাউকে ভোটার করে নিতে পারেন না।
এবার হালনাগাদে ভোটার বৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ অর্থাৎ ৮৪ লাখ ৯৬ হাজার ৫২৬ জনকে অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সংস্থাটি। গতবারের মতো এবারও তিন বছরের তথ্য একসঙ্গে নেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তার পূর্বে যারা জন্মগ্রহণ করেছেন, তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এর মধ্যে যাদের বয়স যখন ১৮ বছর পূর্ণ হবে, তখন তারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভোটার তালিকায় যুক্ত হবেন।
+ There are no comments
Add yours