দেশের স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে গত এক বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দাপিয়ে বেড়িয়েছে চট্টগ্রামের তিন পণ্য (পোশাক, পাট ও পাটজাত ও হোম টেক্সটাইল পণ্য)।
অন্যদিকে বছরের ব্যবধানে কৃষি ও কৃষিজাত, চামড়া ও চামড়াজাত এবং পাট ও পাটজাত পণ্যে রপ্তানি আয় তুলনামূলকভাবে কমেছে।
চট্টগ্রাম থেকে মোটাদাগে রপ্তানি হয় ১১ ধরনের পণ্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে জার্মানি, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, স্পেন, ইতালি, কানাডা, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, জাপান, চীন, তুরস্ক, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এসব পণ্য রপ্তানি হয়ে থাকে।
সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে এই ১১ ধরনের পণ্য থেকে আয় এসেছে প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে পোশাক খাত, পাট ও পাটজাত ও হোম টেক্সটাইল পণ্য এ তিন খাত থেকেই এসেছে ৮৭ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত একবছরে গার্মেন্টস পোশাক থেকে ৪২ হাজার ৬১৩ কোটি টাকা, ওভেন পোশাক থেকে ১৯ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা, নিটওয়্যার থেকে ২৩ হাজার ২১৪ কোটি টাকা, হোম টেক্সটাইল থেকে ১ হাজার ৬২১ কোটি টাকা, পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে ১ হাজার ১২৭ কোটি টাকা, হোম টেক্সটাইল থেকে ১ হাজার ৬২১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা আয় হয়েছে। এই তিন খাত থেকে সবচেয়ে বেশি আয় হয়েছে।
অন্যান্য খাতের মধ্যে সিমেন্ট ও লবণ খাত থেকে ৮৯ কোটি ৯৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা, হিমায়িত ও জীবন্ত মাছ থেকে ৯৮ কোটি ৩ লাখ টাকা, প্রকৌশল দ্রব্য থেকে ৭৯৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা, প্লাস্টিক পণ্যে ১৬৬ কোটি টাকা, পেট্রোলিয়াম পণ্য রপ্তানি করে ৩১০ কোটি ২০ লাখ টাকা, ৯৩৯ কোটি ১৫ লাখ ৪০ হাজার টাকার সবজি ও ২০ কোটি ১১ লাখ ৬০ হাজার টাকার চা রপ্তানি হয়েছে।
তবে অন্য তিন খাতে আয় গতবছরের তুলনায় কমেছে। গতবছরের কৃষি ও কৃষিজাত খাতে আয় ৫৭৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা কমেছে। সে হিসেবে গত এক বছরে হয়েছিল ১ হাজার ১৬২ কোটি ২৫ লাখ টাকা, পাট ও পাটজাত পণ্যে ৫১১ কোটি টাকা কমে ১ হাজার ১২৭ কোটি টাকা এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে ২১৬ কোটি টাকা কমে ১ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা আয় হয়েছে।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি ওভেন পোশাক, জার্মানিতে বাই সাইকেল, হোম টেক্সটাইল, ওভেন পোশাক রপ্তানি হয়। এদিকে প্রতিবেশি দেশ ভারতে পাট ও পাটজাত পণ্য, নীটওয়্যার ও প্লাস্টিক পণ্য, যুক্তরাজ্যে ওভেন পোশাক, নীটওয়্যার জাতীয় পণ্য, ফ্রান্সে ফুটওয়্যার, হোম টেক্সটাইল পণ্য, স্পেনে পাদুকা, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, ইতালিতে নীটওয়্যার, হোম টেক্সটাইল পণ্য, কানাডায় সবচেয়ে বেশি নীটওয়্যার ও ওভেন পোশাক রপ্তানি হয়ে থাকে। তাছাড়া নেদারল্যান্ডসে ক্রাস্টেসিয়ানস, নীটওয়্যার, ওভেন পোশাক, জাপানে পাদুকা, চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়।
বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, বর্হিঃবিশ্বে জ্বালানি সংকটের কারণে সরকার বাধ্য হয়ে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করাতে পোশাক শিল্পের উৎপাদন খাতে খরচ বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়া বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য একদিন করে কারখানা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। যার ফলে রপ্তানি খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে নিশ্চিত পিছিয়ে পড়তে হবে। রপ্তানি আয়ও কমে যাবে। ফলে শ্রমিকদের বেতন ভাতা পরিশোধে বিলম্ব হবার কারণে শ্রমিক অসন্তোষসহ পোশাক খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
+ There are no comments
Add yours