রাজশাহীতে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকাকে প্রকাশ্যে কান ধরে ওঠবস করানোর অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২৪ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পবা উপজেলার হাড়ুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষিকা রাজশাহী নগরীর হড়গ্রাম রায়পাড়া এলাকার বাসিন্দা। ২০০৮ সাল থেকে তিনি হাড়ুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত। ২০০৬ সাল থেকে শিক্ষকতায় যুক্ত হন তিনি। ঘটনার পর থেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তিনি।
ফেসবুকে ছবি দেওয়া নিয়ে সবার সামনেই তাকে তিরস্কার করেন প্রধান শিক্ষক। এরপর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির বাবা ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল আজিজকে ডেকে আনেন। আব্দুল আজিজ তাকে কান ধরে ওঠবস করতে বাধ্য করেন। এর আগে তাকে গালাগাল দেন, মারতেও উদ্ধত হন।
শিক্ষিকা অভিযোগ করে বলেন, প্রকাশ্যে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটলেও প্রতিবাদ জানাননি প্রধান শিক্ষক ও তার শিক্ষক স্বামী। উল্টো ঘটনা জানাজানি হলে বদলি এমনকি চাকরিচ্যুতির হুমকি দেন।
এই ঘটনায় তিনি চরমভাবে অপমানবোধ করেছেন। মানসিকভাবে ভেঙেও পড়েছেন। ঘটনার পর বিষয়টি তিনি সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোসা. রুনা লায়লাকে জানিয়েছেন।
প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিতে বিদ্যালয় ছুটির পর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তরেও গিয়েছিলেন। কিন্তু অফিস ছুটি হয়ে যাওয়ায় অভিযোগ দেওয়া যায়নি।
জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, শনিবার রাতে তাকে বান্ধবীর সঙ্গে তোলা একটি ছবি হোয়াটসঅ্যাপে পাঠান প্রধান শিক্ষক। ফোন ওই সময় তার বোনের কাছে ছিল। অসাবধানতায় ছবিটি ফেসবুকের মাই-ডেতে চলে যায়।
রোববার সকালে তিনি বিদ্যালয়ে যান। সেদিন প্রধান শিক্ষক নাজমা ফেরদৌসি ছুটিতে ছিলেন। তাকে প্রধান শিক্ষকের ছবি ফেসবুকে শেয়ার করা নিয়ে জেরা করেন আরেক সহকারী শিক্ষক ইসমত আরা শিউলি। বিষয়টি অসাবধানতাবশত উল্লেখ করে তিনি ক্ষমতা চান।
তবে ওই শিক্ষিকাকে কান ধরে ওঠবস করানোর অভিযোগ অস্বীকার করেন প্রধান শিক্ষক নাজমা ফেরদৌসি। তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন, ওই শিক্ষিকা দীর্ঘ দিন ধরেই তার ব্যক্তিগত ছবি নিজের ফেসবুকে দিয়ে আসছিলেন। টিকটক ভিডিও বানিয়ে ফেসবুকে প্রচারও করে আসছিলেন। বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও তিনি তা আমলেই নেননি। বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও জানানো হয়েছে।
+ There are no comments
Add yours