বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জে স্থানীয় সংসদ সদস্যের অনুসারী হয়ে ছাত্রলীগ না করায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে ঢুকে কাউন্সিলরের নেতৃত্বে চারজনকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনা ঘটেছে।
রোববার (২৮ আগস্ট) দুপুরে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন- ছাত্রলীগ কর্মী রিমান, আব্দুল্লাহ, মেহেদী হাসান জিহাদ ও মেহেদী হাসান।
আহতদের উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা সবাই পৌর মেয়র কামাল খানের অনুসারী। আর হামলাকারীরা বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য পংকজ নাথের অনুসারী বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র কামাল খান বলেন, সংসদ সদস্য পংকজ নাথের হয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি না করায় রিমানের ওপর আগে থেকেই ক্ষুব্ধ ছিল এমপির লোকজন। শনিবার (২৭ আগস্ট) রাতে রিমানকে এক দফায় মারধর করে।
আজকে (রোববার) দুপুর ১টার দিকে রিমানকে তুলে নেয় কাউন্সিলর সোহেল মোল্লা ও তার লোকজন। সেখানে মারধর করে। খবর পেয়ে রিমানের বন্ধুরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। এ খবর পেয়ে সোহেল মোল্লা সহযোগীদের নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঢুকে পুনরায় রিমান ও তার বন্ধুদের কুপিয়ে জখম করেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা করা হবে বলে জানান পৌর মেয়র।
যদিও কাউন্সিলর সোহেল মোল্লা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, যারা অভিযোগ করেছেন তারা সকলেই ছাত্রদলের নেতাকর্মী। পৌর মেয়র কামাল খানের ছেলের সঙ্গে চলাফেলা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাইয়্যেদ মো. আমরুল্লাহ বলেন, হাসপাতালে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তবে ভাঙচুরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমরা তাৎক্ষণিক পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেছি।
বরিশালের সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান বলেন, মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে বলে জেনেছি। তবে সরকারি স্থাপনা ভাঙচুর বা হামলার কোনো তথ্য পাইনি। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন।
উল্লেখ্য, এর আগে পৌর মেয়র কামাল খানকে ‘কোপানোর নির্দেশ’ দেন সংসদ সদস্য পংকজ নাথ। থানার পুলিশ পরিদর্শক তৌহিদুজ্জামানের সঙ্গে এমন একটি কথোপকথন ভাইরাল হয়েছিল। বিষয়টি স্বীকারও করেছিলেন সংসদ সদস্য। মূলত মেহেন্দীগঞ্জ ও হিজলায় এমপি পংকজ নাথ ও বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস অনুসারীদের মধ্যে রাজনৈতিক দূরত্ব দীর্ঘদিনের। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও ঘটেছে।
+ There are no comments
Add yours