বিশ্বের প্রায় ৪০০ কোটি মানুষ সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছেন। বিশ্বের অর্ধেক স্বাস্থ্যসেবা স্থাপনায় মৌলিক পরিচ্ছন্নতা পরিষেবার অভাব রয়েছে। এসব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে (হাসপাতাল, ক্লিনিক ও অন্যান্য স্থান) স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী যেমন- হ্যান্ড স্যানিটাইজার, বিশুদ্ধ পানি ও সাবানের তীব্র অভাব রয়েছে।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের স্বাস্থ্য ও শিশুবিষয়ক দুটি সংস্থার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। স্টকহোমে ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াটার উইকের’ বার্ষিক সম্মেলনে যৌথ এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। চলমান এই সম্মেলন আগামী বৃহস্পতিবার শেষ হবে।
জাতিসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ বলছে, যেসব স্থাপনায় রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং রোগীরা যে টয়লেট ব্যবহার করেন, সেসব স্থানে পানি এবং সাবান বা অ্যালকোহল-ভিত্তিক হ্যান্ড স্যানিটাইজারও নেই।
জাতিসংঘের এই দুই সংস্থার যৌথ পর্যবেক্ষণ কর্মসূচি শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের প্রায় ৩৮৫ কোটি মানুষ এসব স্থাপনা ব্যবহার করেন এবং তারা নিজেদের সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে ফেলছেন। এমনকি তাদের মধ্যে প্রায় ৬৮ কোটি ৮০ লাখ মানুষ যেসব স্থাপনায় স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন, সেখানে জীবাণুনাশক সামগ্রী বা হাইজিন পরিষেবা একেবারেই ছিল না।
বিশ্বের ৪০টি দেশের স্বাস্থ্যসেবা স্থাপনায় স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধির ওপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। যাকে ‘আশঙ্কাজনক চিত্র’ বলছে ডব্লিউএইচও ও ইউনিসেফ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের ৬৮ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা স্থাপনায় রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হয়। এছাড়া ৬৫ শতাংশ স্থাপনায় টয়লেটে পানি এবং সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে মাত্র ৫১ শতাংশ স্থাপনায় স্বাস্থ্যবিধি পালন এবং টয়লেটে পানি ও সাবান— উভয়ই রয়েছে। আর এসব স্থাপনা মৌলিক স্বাস্থ্যবিধি সেবার মানদণ্ড পূরণে সক্ষম হয়েছে। তবে বিশ্বের প্রায় ৯ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা স্থাপনায় স্বাস্থ্যবিধির কোনও বালাই নেই।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যসেবা স্থাপনার বেহাল দশায় সবার চেয়ে পিছিয়ে আছে আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চল। এই অঞ্চলের মাত্র ৩৭ শতাংশ টয়লেটে সাবান এবং পানি দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। আর স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ৫৩ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা স্থাপনায় সুরক্ষিত পানির উৎসের পরিষেবা আছে।
বিশ্বজুড়ে শহরাঞ্চলের প্রায় তিন শতাংশ এবং গ্রামীণ এলাকার ১১ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা স্থাপনায় পানির কোনও ব্যবস্থাই নেই। এছাড়া অনেক স্থাপনায় পরিবেশগত মৌলিক পরিচ্ছন্নতা, পৃথক সুরক্ষা এবং স্বাস্থ্য বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থার ঘাটতি রয়েছে।
+ There are no comments
Add yours