ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রীর এপার ওপার

Estimated read time 1 min read
Ad1

কনজারভেটিভ পার্টির নেতা হিসেবে বরিস জনসনের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার দৌড়ে জয়ী হয়ে লিজ ট্রাস যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। কিন্তু কীভাবে এবং কোন কৌশলে ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন তিনি?

বেক্সিটের সমর্থক কনজারভেটিভ পার্টির ডানপন্থীদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে লিজ ট্রাসের। সাবেক লিবারেল ডেমোক্র্যাট কর্মী লিজ ট্রাস আশির দশকে মার্গারেট থ্যাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলেও এখন নিজেকে থ্যাচারপন্থী শিখার রক্ষক বলে দাবি করেন।

কিন্তু তার কর হ্রাস ও রাষ্ট্রকে সঙ্কুচিত করার মতো মৌলিক রক্ষণশীল মূল্যবোধে ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি সঠিক প্রমাণিত হয়েছে এবং দলের সদস্য যারা জনসনের কাছ থেকে দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত রায় দিয়েছেন তারাও ট্রাসের অবস্থান জানতে চেয়েছিলেন।

নেতৃত্ব নিয়ে তিক্ততা শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত জনসনের অনুগত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস। তৃণমূলের টরি সমর্থকরা মার্গারেট থ্যাচারের মতো লিজ ট্রাসের মাঝে অটল, অনমনীয় এবং দৃঢ় সংকল্পের গুণাবলী দেখেন। বছরের পর বছর ধরে রাজনৈতিক অবস্থান এবং আনুগত্য বদলানো সত্ত্বেও এসব শব্দ প্রায়ই শোনা যায় যখন বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যরা তাকে ‘উচ্চাভিলাষী’ চরিত্রের অধিকারী বলে বর্ণনা করেন।

বয়স: ৪৭ বছর

জন্মস্থান: অক্সফোর্ড

বাড়ি: লন্ডন ও নরফোক

শিক্ষা: লিডসের রাউন্ডহে স্কুল ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়

পরিবার: হিসাবরক্ষক হাগ ও লিরিকে বিয়ে করেছেন ট্রাস। তাদের সংসারে রয়েছে দুই মেয়ে।

সংসদীয় এলাকা: সাউথ ওয়েস্ট নরফোক

২০১৭ সালে তার ভাই ফ্রান্সিস নিরামিষভোজীদের সাথে তার বোন লিজ ট্রাসের কৈশোরের প্রেমের কথা স্মরণ করে বলেছিলেন, ট্রাস একেবারে সুনিপুণ মতামতপূর্ণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী। যা চায় সে ব্যাপারে তার পরিষ্কার মতামত থাকে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে লিজ ট্রাসের সমসাময়িক শিক্ষার্থী মাউরিজিও গিউলিয়ানো। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুুকানোর পর দুই সহপাঠীর একবার দেখা হয়েছিল লিবারেল ডেমোক্র্যাটের এক অনুষ্ঠানে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রাসকে কেমন দেখেছিলেন মাউরিজ? তিনি বলেন, অন্যান্য শিক্ষার্থীদের চেয়ে আলাদা ছিলেন লিজ ট্রাস।

১৯৭৫ সালে অক্সফোর্ডে জন্মগ্রহণকারী ট্রাস তার গণিতের অধ্যাপক বাবা এবং নার্স মাকে ‘বামপন্থী’ হিসাবে বর্ণনা করেন। একেবারে তরুণী বয়সে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের এক আন্দোলনে ট্রাসকে নিয়ে গিয়েছিলেন তার মা।

সেই সময় লন্ডনের পশ্চিমের আরএএফ গ্রীনহ্যাম কমনে মার্কিন পারমাণবিক ওয়ারহেড স্থাপনে থ্যাচার সরকারের অনুমতির সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছিল একটি সংগঠন। সেই সংগঠনের ডাকে আন্দোলনে মায়ের সাথে যোগ দিয়েছিলেন ট্রাসও। যদিও তিনি এখন লিডসের একজন গর্বিত কনজারভেটিভ। আর সেই সময়ে তিনি একজন স্কটিশ লিবারেল ছিলেন।

ট্রাসের চার বছর বয়সের সময় তার পরিবার গ্লাসগোর ঠিক পশ্চিমের পেসলে শহরে চলে যায়। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি মিছিলে অংশ নেওয়ার সময় স্কটিশ উচ্চারণে ‘ম্যাগি, ম্যাগি, ম্যাগি – ওট, ওট, ওট’ বলে চিৎকার করেছিলেন, সেই কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন।

লিজ ট্রাসের পরিবার পরবর্তীতে লিডসে চলে আসে, যেখানে তিনি রাউন্ডহে সেকেন্ডারি স্কুলে ভর্তি হন। সেই সময় তিনি শিশুদের ব্যর্থ হওয়া এবং কম প্রত্যাশার কারণে ভেঙে পড়তে দেখেন।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন, রাজনীতি এবং অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন ট্রাস। বন্ধুরা তাকে অনেক পছন্দ করতেন, যদিও বন্ধুুমহলে তিনি প্রচুর কথা বলতেন বলেও শোনা যায়।

১৯৯৪ সালের দলীয় এক সম্মেলনে রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করার পক্ষে নিজের মত দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আমরা লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা সবার জন্য সুযোগের ধারণায় বিশ্বাসী। নির্দিষ্ট কিছু মানুষ কেবল শাসন করার জন্য জন্মেছে, আমরা এটি বিশ্বাস করি না।

শুধু তাই নয়, তিনি গাঁজাকে অপরাধমুক্ত করার জন্য প্রচারণাও চালিয়েছিলেন। ২০১৭ সালে লিব ডেমের সহপাঠী অ্যালান রেনউইক বলেছিলেন, ‘লিজ অত্যন্ত উদারপন্থী ধারার কট্টর বিশ্বাসী ছিলেন।’

নিজস্ব প্রতিবেদক https://khoborbangla24.net

বিশ্বজুড়ে দেশের খবর

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours