দীর্ঘ সময় চেষ্টার পরও চাকরি না পাওয়ায় হতাশায় একাডেমিক সব সনদপত্র ছিঁড়ে ফেলেছেন বাদশা মিয়া নামে নীলফামারীর এক যুবক।
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে শিক্ষা জীবনে অর্জিত সব একাডেমিক সনদপত্র ছিঁড়ে ফেলেন তিনি।
বাদশা মিয়া ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সুন্দর খাতা গ্রামের বাসিন্দা মহুবার রহমানের ছেলে। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় তিনি। তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বাবা।
দীর্ঘ সময় ধরে চেষ্টা করেও চাকরি না পেয়ে বাদশা ফেসবুক লাইভে বলেন, আসলে আমার ভাগ্যটাই খারাপ। কত মানুষ ভুয়া সার্টিফিকেট নিয়া করে খাচ্ছে। আর আমি এত সার্টিফিকেট নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও একটা সরকারি বা বেসরকারি চাকরি জোটাতে পারিনি। সনদপত্র অনুযায়ী চাকরির বয়স শেষ, এখন এগুলো রেখে লাভ কী? বয়স থাকতেই তো চাকরি জোটাতে পারিনি।
বাদশা পাঙ্গা চৌপতি আব্দুল মজিদ দাখিল মাদরাসা থেকে ২০০৭ সালে জিপিএ ৩.৯২ পেয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে দাখিল, ২০০৯ সালে সোনাখুলি মুন্সিপাড়া কামিল মাদরাসা থেকে জিপিএ ৪.০৮ পেয়ে আলিম এবং ২০১৪ সালে নীলফামারী সরকারি কলেজ থেকে পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তবে অর্থের অভাবে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করতে পারেননি তিনি।
বাদশা আরও বলেন, আমার বাবা খেয়ে না খেয়ে আমাকে লেখাপড়া শিখিয়েছেন। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা ও ছোট ভাই-বোনদের মুখের দিকে তাকাতে পারি না। বর্তমান সমাজে সবচেয়ে অসহায় মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষিত ছেলেরা। এরা না পারে চাকরি জোটাতে, আবার না পারে অর্থের অভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে।
ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, তাকে আমরা যুব উন্নয়নের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের আওতায় তাকে নিয়ে আসব, যাতে তিনি উদ্যোক্তা হতে পারেন। চাকরির পেছনে না ছুটে তিনি যেন নিজেই একজন সফল উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারেন, আগামী যেকোনো বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের আওতায় আমরা তাকে অবশ্যই আনব।
+ There are no comments
Add yours