খুলনার দৌলতপুরের রহিমা বেগম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে তাকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন।
তবে কুদ্দুস মোল্লার স্বজনদের কাছে তিনি জানিয়েছিলেন, জমি বিক্রি সংক্রান্ত বিষয়ে ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে রাগ করে তিনি ঘর ছেড়েছেন।
রহিমা বেগম ফরিদপুরের যার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন সেই কুদ্দুস মোল্লার ভাগনে মোহাম্মদ জয়নাল আবেদিন জানান, শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ফেসবুকসহ বিভিন্ন নিউজ পোর্টালে তিনি রহিমা বেগমের ছবি দেখতে পান। তিনি তাকে শনাক্ত করেন। ওই ছবি দেখানো হয় রহিমা বেগমকে। তিনি ছবিটি নিজের বলে স্বীকার করেন।
ছবি দেখার পর রহিমা জয়নালকে জানান, ছেলেমেয়েরা তাকে পছন্দ করেন না। তিনি বাড়িতে ফিরে যাবেন না। তিনি বাড়িতে গেলে তাকে মেরে ফেলা হবে।
রহিমা আরও জানান, তিনি মৃত স্বামী মান্নানের কাছ থেকে পাঁচ শতাংশ (দুই কাঠা) জমি পেয়েছেন। ছেলেমেয়েরা এ জমি বিক্রির জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। জমি বিক্রির পর তারা টাকা নিয়ে অন্যত্র চলে যেতে চাপ দিচ্ছিলেন। কিন্তু তাতে রাজি না হয়ে রাগ করে চলে এসেছেন তিনি।
কুদ্দুস মোল্লার মেয়ের জামাই নূর মোহাম্মদ জানান, রহিমা বেগম কেন এবং কী কারণে এ বাড়িতে এসেছে তা তিনি তার শাশুড়ির কাছে জানতে চান। শাশুড়ি জানান, খুলনায় থাকাকালে রহিমার সঙ্গে তাদের পরিচয় হয়। সেই সূত্রে তিনি বেড়াতে এসেছেন।
সুরাইয়া জানান, রহিমা বেগম তাকে বলেছেন, জমি নিয়ে প্রতিবেশীর সঙ্গে গন্ডগোল হয়েছে, ঝামেলা চলছে। এ ঝামেলার জন্য তাকে মারধরও করা হয়েছে। তাই তিনি বাড়ি থেকে চলে এসেছেন। যদিও তার শরীরে মারপিটের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে তিনি শারীরিকভাবে বেশ দুর্বল ছিলেন।
এর মধ্যেই জন্ম নিবন্ধনের কার্ড পেতে বোয়ালমারী ইউনিয়নে যান রহিমা বেগম। ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হক শেখ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ২২ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টার দিকে রহিমা বেগম আমার পরিষদে আসেন। এসে তিনি আমাকে বলেন, তার জন্ম এ ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। কিন্তু ঘটনাচক্রে তিনি বেড়ে ওঠেন বাগেরহাট জেলায়। সেখানে বিভিন্ন বাড়িতে কাজ করে খান। তিনি সৈয়দপুর গ্রামে বাবার সম্পত্তি ভাইদের থেকে বুঝে নিতে এসেছেন। এজন্য তার নাগরিকত্ব সনদ দরকার।
চেয়ারম্যান তার কাছে ৯ নম্বর ওয়ার্ডে জন্মগ্রহণের প্রমাণ চান এবং ওই ইউপি সদস্যের সুপারিশ চান। এ কথা শুনে তিনি আর কোনো কথা না বলে তাড়াহুড়ো করে ইউনিয়ন পরিষদ ত্যাগ করেন। পরে ইউপি চেয়ারম্যান ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মোশাররফ হোসেন মোল্লাকে খোঁজ নিতে বলেন। ইউপি সদস্য খোঁজ নিয়ে চেয়ারম্যানকে জানান, রহিমা বেগমের জন্ম তার ওয়ার্ডে নয়। তিনি কুদ্দুস মোল্লার খুলনার ভাড়া বাসার মালিক।
রোববার বেলা ১১টার দিকে রহিমা বেগমকে পুলিশ বুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) খুলনা কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়। পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান জানিয়েছেন, রহিমা বেগম দাবি করেছেন, তাকে অপহরণ করা হয়েছিল।
+ There are no comments
Add yours