কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ কৃত্রিমতা ও ভন্ডামিতে ভরা নাগরিক সমাজের লোক নন। তিনি শুধু লেখায় নয় যাপনে বিশ্বাসী ছিলেন। জীবনে জীবন যোগ করার এক আশ্চর্য ক্ষমতা ছিলো কবি রুদ্র’র মধ্যে। যতদিন বেঁচে ছিলেন ততদিন তথাকথিত নাগরিক সমাজে রুদ্র বড় কোনঠাসা অবস্থায় ছিলেন। কিন্তু রুদ্র যখন মারা গেলেন কেউ তাঁকে অস্বীকার করতে পারেনি। রোববার (১৬ অক্টোব) সকালে মোংলা মিঠেখালিতে কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ’র ৬৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও রুদ্র স্মৃতি সংসদের যৌথ আয়োজনে স্মরণানুষ্ঠানের আলোচনা সভায় বক্তারা একথা বলেন।
সকাল ১০টায় মিঠেখালিতে রুদ্র’র রোপণ করা বকুল গাছের চত্বরের স্মরণানুষ্ঠানে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট মোংলার সভাপতি ও রুদ্র সংসদের সাবেক সভাপতি মো. নূর আলম শেখ’র সভাপতিত্বে স্মরণানুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন মিঠাখালি ইউপি চেয়ারম্যান উৎপল কুমার মন্ডল।
স্মরণানুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেন, শিরিয়া বেগম নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওবায়দুল ইসলাম, রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম, অন্তর বাজাও শিল্পী গোষ্ঠির ভোকাল গোলাম মহম্মদ, ইউপি সদস্য উকিল উদ্দিন ইজারদার, সিপিবি নেতা কমরেড আসাদুজ্জামান টিটো, মাহারুফ বিল্লাহ, প্রথম আলো বন্ধুসভার সভাপতি আবুল কাশেম, রুদ্র সংসদের লিটন গাজী প্রমূখ। আলোচনা সভায় বক্তারা আরো বলেন ’ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’-র মতো অসামান্য একটি প্রকৃত আধুনিক বাংলা গানের শ্রষ্টাও রুদ্র। যাবতীয় অসাম্য, শোষণ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান রুদ্রকে পরিণত করেছে ‘তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক’-এ। একই সঙ্গে তাঁর কাব্যের আরেক প্রান্তর জুড়ে রয়েছে স্বপ্ন, প্রেম ও সুন্দরের মগ্নতা। দেশ ও জাতির সংকটে রুদ্রের কবিতা হয়ে উঠেছে তারুণ্যের হাতিয়ার। আলোচনা সভার আগে শোভাযাত্রাসহকারে রুদ্র সংসদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, সিপিবি, ছাত্র ইউনিয়ন, অন্তর বাজাও, রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ প্রাথমিক বিদ্যাপীঠ, শিরিয়া বেগম নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন শেষে দোয়া-মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া রুদ্র স্মরণানুষ্ঠানে কবির লেখা গান পরিবেশন ও কবিতা আবৃত্তি করা হয়।
+ There are no comments
Add yours