
সাবরীন জেরীন,মাদারীপুর
মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার সীমান্তে মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন মাদারীপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের দুই কর্মকর্তাসহ পাঁচ সদস্য। বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) ভোর ৫টার দিকে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রাঘদী ইউনিয়নের পূর্ব রাঘদী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
হামলার শিকার মাদারীপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ওই কর্মকর্তারা হলেন, পরিদর্শক বিমল চন্দ্র বিশ্বাস (৫৪), এএসআই গোলাম কিবরিয়া (৪৩), সিপাহী হাসান (৩০), সিপাহী সাইদুর (৩০) ও ড্রাইভার রাসেল ইসলাম (৩১)। তাদের উদ্ধার করে রাজৈর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
মুকসুদপুর থানার সিন্দিয়াঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ, মাদারীপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গোপন সূত্রের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) ভোরে মুকসুদপুরের পূর্ব রাঘদী গ্রামে শাহিন শেখ (২৪) নামে এক মাদক ব্যবসায়ীর বাড়িতে মাদারীপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শক বিমল চন্দ্র বিশ্বাসের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি টিম অভিযান চালায়। এ সময় শাহিনের ঘরের দরজা ধাক্কাধাক্কি করলে শাহিনের স্ত্রী সোনিয়া বেগম চিৎকার দিলে বাড়ির অন্যান্যরা এগিয়ে আসে এবং কথা-কাটাকাটি হয়। এ সময় ডাকাত সন্দেহে ওই কর্মকর্তাদের ওপর হামলা চালায় এলাকাবাসী।
পরিদর্শক বিমল চন্দ্র বিশ্বাস ও এএসআই গোলাম কিবরিয়া জানান, নিজেদের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তা বলে পরিচয়পত্র দেখালেও ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার দিতে থাকে বাড়ির লোকজন। পরে এলাকাবাসী এগিয়ে এসে আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে বেদম মারপিট করে দুজনকে আটকে রাখে। এ সময় অন্য তিনজন দৌড়ে পালিয়ে গিয়ে আত্মরক্ষা করে।
হামলাকারীরা এ সময় ওই কর্মকর্তাদের কাছ থেকে মোবাইল সেট, ওয়াকিটকি, হ্যান্ডকাপ, আইডি কার্ড ও কিছু নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে সিন্দিয়াঘাট ফাঁড়ির পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে ওই আটককৃত কর্মকর্তাদের উদ্ধার করে এবং স্থানীয়দের সহযোগিতায় ছিনিয়ে নেয়া ওয়াকিটকি ও হ্যান্ডকাপসহ অন্যান্য মালামাল উদ্ধার করে। হামলার খবর পেয়ে মাদারীপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আসলাম হোসেন ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।
এ ব্যাপারে তিনি (মাদারীপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আসলাম হোসেন) জানান, আমাদের একটি টিম বৃহস্পতিবার ভোরে দুই জেলার সীমান্ত এলাকায় মাদক উদ্ধারে যাওয়ার পর মাদক ব্যবসায়ীদের দ্বারা হামলার শিকার হয়ে আহত হয়েছেন। আহত ৫ জনকে রাজৈর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা দায়ের করা হবে।
মাদক ব্যবসায়ী শাহিনের চাচা মানোয়ারের দাবি, সাদা পোষাকে কিছু লোক এসে শাহিনের দরজা ধাক্কাধাক্কি করলে আমাদের সন্দেহ হয় এবং ডাকাত মনে করে এলাকাবাসী হামলা করে।
মুকসুদপুরের সিন্দিয়াঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক মো. আবুল বসার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, খবর পেয়ে সিন্দিয়াঘাট পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ ও মুকসুদপুর থানার পুলিশ যৌথভাবে হামলাকারীদের গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করেছেন। ইতোমধ্যে ওই কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া মোবাইল ফোন, ওয়াকিটকি ও অন্যান্য মালামাল পুলিশ উদ্ধার করেছে। মুকসুদপুর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
+ There are no comments
Add yours