আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালে জনগণের ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছিলেন। এর প্রতিবাদে দেশের মানুষ আন্দোলন করেছিল।
রোববার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ১০ ডিসেম্বর বিএনপির প্রিয় তারিখ। এই ১০ ডিসেম্বর পাকিস্তানিরা বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। চট্টগ্রামের কথা সবসময় আমার মনে পড়ে। বাবা জেল থেকে বের হলেই চট্টগ্রামে নিয়ে আসতেন। করোনার কারণে দীর্ঘ সময় আসতে পারিনি, তাই আজ হাজির হয়েছি। এই লালদিঘীর সামনে ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি আমাকে হত্যা করতে গুলি করা হয়।
এ ঘটনার সঙ্গে খালেদা জিয়াও জড়িত ছিলেন। সেই হত্যাকারী পুলিশ অফিসারকে প্রমোশন দেওয়া হয়। বেশি দিন আগের কথা নয়, ২০০১ নির্বাচনের পর এই চট্টগ্রামে হিন্দু বৌদ্ধ কেউ রেহাই পায়নি তাদের (বিএনপি) অত্যাচার থেকে।
সরকারপ্রধান বলেন, তারা (বিএনপি) মানুষের শান্তি চায় না, তারা ক্ষমতায় থেকে লুটপাট করেছে। জিয়াউর রহমান যখন মারা যান তখন ৪০ দিন পর্যন্ত শুনেছিলাম জিয়াউর রহমান নাকি কিছু দিয়ে যাননি, ভাঙা একটা সুটকেস ছাড়া। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে হাওয়া ভবনের নামে এত টাকা কই পেলেন? ভাঙা সুটকেসে কি জাদু ছিল?
ভাষণের শুরুতে তিনি জনসভায় যোগ দেওয়া স্থানীয় নেতাকর্মী ও সর্বসাধারণের উদ্দেশে চট্টগ্রামের ভাষায় বলেন, ‘অনারা ক্যান আছন, গম আছননি?’ তখন উপস্থিত জনতা বলেন, ‘আঁরা গম আছি।’
বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের অধিকার আছে, এই আইন জাতির পিতা করে গেছেন। কিন্তু বিএনপি এ আইন ও অধিকার বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা সেই সমুদ্র জয় করেছি। আজ সেগুলো আমাদের কাজে লাগছে। বিএনপির দুটি গুণ আছে। একটি হলো ভোট চুরি, অপরটি মানুষ খুন।
২০১৪ সালে বিএনপি ক্ষমতায় না যেতে পেরে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে। তিন হাজারের বেশি মানুষ তখন আহত হয়েছে। ৫ শ’র বেশি মানুষ মারা গেছে। অনেক গাড়িতে আগুন দিয়েছে তারা। মানুষ পুড়িয়ে মারার হিসাব একদিন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে দিতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বিদ্যুৎ নিয়ে কিছু দিন কষ্ট হয়েছিল। ভবিষ্যতে আর হবে না ইনশাল্লাহ। তবে আপনাদের কাছে অনুরোধ, সাশ্রয়ী হতে হবে। বিদ্যুৎ ব্যবহার সীমিত করতে হবে। আপনারা জানেন না, এই শীতকালে ইংল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের কী অবস্থা। সেসব দেশের মানুষ গরম পানি পাচ্ছে না। তারা রুম হিট করতে পারছে না।
এক রুমের মধ্যে সমস্ত পরিবার নিয়ে থাকতে হচ্ছে। দোকানে গেলে জিনিস কিনতে পারে না। হয়ত এক প্যাকেট জিনিসের বেশি একটি পরিবার কিনতে পারবে না। এমন অবস্থা তাদের। আমি বলতে চাই, বাংলাদেশে এই অবস্থা হবে না। আমরা মানুষের সবরকম সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত রাখব। কিন্তু আপনাদের সহযোগিতা চাই।
তিনি বলেন, আমরা কষ্ট করে রিজার্ভ বাড়ালাম। দ্বিতীয়বার যখন ক্ষমতায় আসি তখন রিজার্ভ মাত্র পাঁচ বিলিয়ন ডলার। আমরা রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে গিয়েছিলাম। আমরা বাংলাদেশে বিনামূল্যে টিকা দিয়েছি। রিজার্ভের টাকা মানুষকে দিয়েছি, ওষুধ কিনেছি, ভ্যাকসিন কিনেছি। দেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে। করোনা পরীক্ষা বিনামূল্যে করিয়েছি। জনগণের কথাই আমরা ভাবি, তাদের কল্যাণেই কাজ করি।
+ There are no comments
Add yours