আজ ১১ ডিসেম্বর, ঐতিহাসিক কুষ্টিয়া মুক্ত দিবস।
১৯৭১ সালের এ দিনে কুষ্টিয়া জেলা হানাদার বাহিনী মুক্ত হয়েছিল। কুষ্টিয়া জেলার মুক্তি সেনারা রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে ছোট-বড় ২২ যুদ্ধ শেষে পাকিস্তানি বাহিনীর হাত থেকে কুষ্টিয়াকে মুক্ত করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৯ মাসজুড়েই কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর তুমুল লড়াই হয়েছিল।
১৯৭১ সালের ৩০ মার্চ ভোরে বাংলার দামাল ছেলেরা কুষ্টিয়া জিলা স্কুলে পাকিস্তানি হানাদার ক্যাম্পে হামলা চালান। এ যুদ্ধে নিহত হয় অসংখ্য পাকিস্তানি সেনা। এরপর বংশীতলা, দুর্বাচারা, আড়পাড়া, মঠবাড়িয়া, মিরপুরের কাকিলাদহ, কুমারখালীর ঘাসখালিসহ ৪৪টি যুদ্ধ সংঘটিত হয় কুষ্টিয়া জেলায়। শেষপর্যন্ত ১ এপ্রিল পাকিস্তানি বাহিনী কুষ্টিয়া ছেড়ে পালিয়ে যায়। প্রথমবারের মতো মুক্ত হয় কুষ্টিয়া।
পরবর্তীতে ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন হয়। এরপর থেকে দফায় দফায় বিমান হামলা চালায় পাকিস্তানি বাহিনী। তারা আবারও কুষ্টিয়া দখলে নিয়ে গণহত্যার উৎসবে মেতে উঠে। তবে ৬ ডিসেম্বর তিন দিক থেকে মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণে বৃহত্তর কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকা হানাদারমুক্ত হতে থাকে। ৯ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া শহর ছাড়া অন্যান্য এলাকা শত্রুমুক্ত হয়। তবে তুমুল যুদ্ধ চলে কুষ্টিয়ায়। অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করে ১১ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ার মাটি শত্রুমুক্ত করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের আজকের এ দিনে (১১ ডিসেম্বর) কুষ্টিয়া জেলা হানাদার মুক্ত হয়। আজ ১১ ডিসেম্বর। ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের ৫ দিন আগেই কুষ্টিয়ার জনগণ অর্জন করেছিল বিজয় নিশান। একদিকে স্বজনের গলিত মরদেহ আর সম্ভ্রম হারানো মা-বোনের আর্তনাদ সবকিছুকে ম্লান করে সেদিন বিজয়ের আনন্দে মানুষ রাস্তায় নেমে উল্লাস করেছিল। উড়িয়েছিল লাল সবুজের পতাকা।
+ There are no comments
Add yours