বাংলাদেশের বনাঞ্চলে ইন্টারপোলের নজরদারি

Estimated read time 1 min read
Ad1

‘বিপন্ন প্রজাতির একটি উল্লুক বান্দরবানের আলীকদম এলাকা থেকে চট্টগ্রাম শহরে পাচার হচ্ছে’- সম্প্রতি ইন্টারপোল থেকে পুলিশ সদর দপ্তরে এমন সংবাদ আসে। চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানার ওসিকে দ্রুত বিষয়টি অবহিত করা হয়। ওসি আতিকুর রহমান নিজেই নামেন অভিযানে উল্লুক উদ্ধারে।

গোপন চেকপোস্ট বিভিন্ন পয়েন্টে বসানো হয় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের। কিন্তু বিপন্নপ্রায় প্রাণীটি কয়েকটি পাচারকারী চক্রের মধ্যে হাতবদল হওয়ায় ইন্টারপোল থেকে প্রাপ্ত তথ্যে কোনোভাবেই উদ্ধার করা যাচ্ছিল না।

তবুও নিজ উদ্যোগে ব্যাপক নজরদারি শুরু করেন সোর্সদের মাধ্যমে। একপর্যায়ে উল্লুকটি উদ্ধার করা হয় উপজেলার চুনতি অভয়ারণ্যের ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে একটি যাত্রীবাহী বাস থেকে। এভাবেই বিভিন্ন সময় বিপন্নপ্রায় উল্লুক, লজ্জাবতী বানর, সজারু, বনমোরগ, মেছোবিড়াল পাচার হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে।

বিপন্নপ্রায় এসব প্রাণী কক্সবাজার ও বান্দরবানের গহীন বনাঞ্চল থেকে পাচার করছে একটি আন্তর্জাতিক চক্র। রুট হিসেবে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা তারা ব্যবহার করছে। এবার লোহাগাড়া থানা পুলিশ প্রাণীগুলো রক্ষায় বিশেষ অভিযানে নেমেছে। এই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিজেই অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল) তাকে সহায়তা করছে।

ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য সারা বিশ্বে অক্টোবর মাসব্যাপী ‘Thunder 2022’ শিরোনামে অভিযান পরিচালনা করে সংস্থাটি। তারা ২০১৭ সাল থেকে এ অভিযান পরিচালনা করে আসছে। ২০২২ সালে ষষ্ঠবারের মতো চালানো ওই অভিযানে অংশ নেয় সর্বোচ্চ ১২৫ দেশের শুল্ক, আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট, পুলিশ, বন্যপ্রাণী ও বনাঞ্চল সংরক্ষণে জড়িত সংস্থা। অভিযানের অংশ হিসেবে ইন্টারপোল বাংলাদেশের বনাঞ্চলেও নজরদারি চালাচ্ছে।

এ বিষয়ে লোহাগাড়া থানার ওসি মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, হেডকোয়ার্টারের (সদর দপ্তর) মাধ্যমে ইন্টারপোল থেকে পাওয়া তথ্যে উল্লুকটি উদ্ধারের পাশাপাশি গ্রেপ্তার করা হয় মো. মুবিন (৩০) ও মাজহারুল (৩৫) নামের দুই পাচারকারীকে। পরে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এক বছর কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

উল্লুকটি উদ্ধারের আগে তিন গ্রুপের মধ্যে হাতবদল হয়। তাই উদ্ধারের ক্ষেত্রে একটু বেগ পেতে হয়েছে। আমরা মামলাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। এই চক্রের আদ্যোপান্ত বের না হওয়া পর্যন্ত আমরা তদন্ত চালিয়ে যাব।

পুলিশ সূত্র জানায়, ওই ঘটনার কয়েকদিন পর অর্থাৎ ২৭ অক্টোবর লোহাগাড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় একটি বনমোরগ ও তিনটি মেছোবিড়াল। বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার গহীন বন থেকে বিপন্নপ্রায় প্রাণী চারটি ধরা হয়। এরপর একটি নম্বরবিহীন মোটরসাইকেলে করে লামা-আজিজনগর হয়ে লোহাগাড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছান মো. এমরান ও মো. আলীম উদ্দিন নামের দুই ব্যক্তি। সেখান থেকে একটি বাসে করে চট্টগ্রাম শহরের রিয়াজউদ্দিন বাজারে নেওয়ার কথা ছিল। তার আগেই লোহাগাড়া থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন দুই পাচারকারী।

 

নিজস্ব প্রতিবেদক https://khoborbangla24.net

বিশ্বজুড়ে দেশের খবর

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours