স্বপ্ন পূরণ করল মেট্রোরেল

Estimated read time 1 min read
Ad1

বাংলার মানচিত্রে বাণিজ্যিকভাবে প্রথমবারের মতো চলতে শুরু করল স্বপ্নের মেট্রোরেল। ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট লাইন বা এমআরটি লাইন-৬ নামে পরিচিত এই মেট্রোরেলের পুরো পথটি নির্মাণ করা হয়েছে ভায়াডাক্টের (মাটির ওপর দিয়ে নির্মিত রাস্তা বা সেতু) ওপর। এর মধ্য দিয়ে নতুন দ্বার উন্মোচন হয়েছে বাংলাদেশের, স্বপ্নপূরণ হয়েছে বাংলার মানুষের।

রাজধানী ঢাকার বুকে এমআরটি লাইন-৬ এর প্রথম অংশ উত্তরা উত্তর (দিয়াবাড়ি) থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চালু হয়েছে। এই পথের দৈর্ঘ্য ১১.৭৩ কিলোমিটার। স্টেশন রয়েছে নয়টি। বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৫ মিনিটে দ্রুতগামী এই যোগাযোগ ব্যবস্থার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসনে এবং পরিবেশ উন্নয়নে দ্রুতগামী, নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, সময়-সাশ্রয়ী, বিদ্যুৎচালিত, দূরনিয়ন্ত্রিত ও পরিবেশবান্ধব অত্যাধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থার প্রবর্তন হিসেবে ২০১৬ সালের ২৬ জুন মেট্রোরেল প্রকল্পের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে ২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদন লাভ করে।

দ্রুতগামী এই যোগাযোগ ব্যবস্থার (এমআরটি লাইন-৬) প্রাক্কলিত ব্যয় (দ্বিতীয় সংশোধিত) হচ্ছে ৩৩ হাজার ৪১৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। যার মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিয়েছে ১৩ হাজার ৭৫৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা এবং জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) সহজ শর্তে ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকার ঋণ দিয়েছে।

 স্টেশন ও রুট

ডিপো থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ২১.২৬ কিলোমিটার আদর্শ-গেজ (এক হাজার ৪৩৫ মিলিমিটার) রেলপথে মোট স্টেশন থাকছে ১৭টি। স্টেশনগুলো হচ্ছে— উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর ১১, মিরপুর ১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, মতিঝিল ও কমলাপুর। বর্তমানে প্রথম পর্যায়ে উত্তরা উত্তর থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত এটি চলবে।

দ্বিতীয় পর্যায়ে অর্থাৎ ২০২৩ সালের মধ্যে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালানোর চেষ্টায় কাজ চলছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন অনুসরণে এমআরটি লাইন-৬ মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১.১৬ কিলোমিটার বর্ধিত করার জন্য যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণের কার্যক্রম চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এই অংশের পরিষেবা যাচাইয়ের কাজও শুরু হয়েছে।

টিকিট ব্যবস্থাপনা

মেট্রোরেলে ‘সিঙ্গেল জার্নি টিকিট’ ও ‘এমআরটি পাস’ ব্যবহার করে যাতায়াত করা যাবে। র‌্যাপিড পাস ব্যবহার করেও যাত্রীসাধারণ স্বাচ্ছন্দ্যে মেট্রোরেলে যাতায়াত করতে পারবেন। টিকিট অফিস মেশিন (টিওএম) থেকে টিকিট বিক্রয়কারীর সহায়তায় সিঙ্গেল জার্নি টিকিট এবং এমআরটি পাস কেনা যাবে। টিকিট ভেন্ডিং মেশিন (টিভিএম) থেকে যাত্রীরা নিজেই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে সিঙ্গেল জার্নি টিকিট এবং এমআরটি পাস টপ-আপ করতে পারবেন।

মোবাইল ও ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন্সের মাধ্যমেও এমআরটি পাস টপ-আপ করা যাবে। ভ্রমণ-দূরত্ব অনুযায়ী সরকার নির্ধারিত ভাড়া পরিশোধ করে সিঙ্গেল জার্নি টিকিট কেনা যাবে। এমআরটি পাস ও র‌্যাপিড পাস থেকে ভ্রমণ-দূরত্ব অনুযায়ী সরকারের নির্ধারিত ভাড়া কাটা হবে। যেকোনো সময় যাত্রী এমআরটি পাস ফেরত দিয়ে জমানতের অর্থ ও অব্যবহৃত অর্থ ফেরত নিতে পারবেন।

মেট্রোরেলে ভাড়া

ডুয়েল কন্টিনিউয়াস ওয়েল্ডেড রেল ট্রাকের এই মেট্রোরেলের ভাড়ার পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করেছে ঢাকা যানবাহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)। সেই হিসাবে যাত্রীর প্রতি কিলোমিটারের জন্য ভাড়া ৫ টাকা; সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ভাড়া ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে উত্তরা উত্তর (দিয়াবাড়ি) থেকে আগারগাঁও স্টেশনের ভাড়া হবে ৬০ টাকা। মাঝে মেট্রোরেলের রয়েছে আরও সাতটি স্টেশন। উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে উত্তরা সেন্টার ও উত্তরা দক্ষিণ স্টেশনের ভাড়া একই, ২০ টাকা। উত্তরা উত্তর থেকে পল্লবী ও মিরপুর-১১ স্টেশনের ভাড়া ৩০ টাকা, মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনের ভাড়া ৪০ টাকা, শেওড়াপাড়া স্টেশনের ভাড়া ৫০ টাকা এবং আগারগাঁও স্টেশনের ভাড়া ৬০ টাকা। আবার আগারগাঁও স্টেশন থেকে শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ পর্যন্ত ২০ টাকা, মিরপুর-১১ ও পল্লবী পর্যন্ত ৩০ টাকা, উত্তরা দক্ষিণ ৪০ টাকা, উত্তরা সেন্টার ৫০ টাকা এবং উত্তরা উত্তর স্টেশন পর্যন্ত ৬০ টাকা ভাড়া দিতে হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক https://khoborbangla24.net

বিশ্বজুড়ে দেশের খবর

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours