ডিপো থেকে একটি কনটেইনার গাড়িতে তোলা এবং বন্দরে পৌঁছাতে খোলা থাকে একটি দরজা। বন্দরে প্রবেশের সময় নিরাপত্তারক্ষীদের মাধ্যমে কনটেইনারগুলো আবারও পরীক্ষা করা হয়।
পরে বন্দর ইয়ার্ডে সেগুলো রাখা হয়। বার্থিং অপারেটররা শেষ পর্যন্ত যাচাই করে কনটেইনারগুলো সংশ্লিষ্ট জাহাজে তোলেন। এক্ষেত্রে কোনোভাবে খালি কনটেইনারে কোনো কিছু নিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে না।
এমন কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যেও খালি কনটেইনারে করে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে একের পর এক মানুষ পাচার হচ্ছে। ফলে ভাবমূর্তি হারাচ্ছে দেশের প্রধান এ সমুদ্র বন্দর। একই সঙ্গে বন্দরের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দরে যাওয়া একটি খালি কনটেইনার থেকে এক কিশোরকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া কিশোরের নাম রাতুল। যে জাহাজটি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে সেটির নাম ‘এমভি ইন্টিগ্রা’। মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী জাহাজটি ১২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রওনা দেয়।
এক হাজার ৩৩৭ কনটেইনার নিয়ে ১৬ জানুয়ারি (সোমবার) জাহাজটি কেলাং বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছায়। ওই সময় জাহাজে থাকা নাবিকেরা কোনো একটি কনটেইনারে আওয়াজ শুনতে পান। এরপর জাহাজটিকে মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) জেটিতে ভেড়ানো হয়। খালাসের একপর্যায়ে একটি খালি কনটেইনার থেকে অসুস্থ অবস্থায় ওই কিশোরকে উদ্ধার করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন্দর-সংশ্লিষ্ট একজন বলেন, যদি ডিপো থেকে খালি কনটেইনারে কেউ ওঠে, বন্দরে প্রবেশের সময় তার ধরা পড়ার কথা। এক্ষেত্রে হয়তো বন্দরের নিরাপত্তা বিভাগ কনটেইনারটি চেক করেনি। অথবা বন্দর ইয়ার্ডেই ছেলেটি কনটেইনারে উঠেছে। এক্ষেত্রে চূড়ান্ত দায়ভার বন্দর কর্তৃপক্ষের।
চট্টগ্রাম চেম্বার ও বন্দর ব্যবহারকারী ফোরামের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, বন্দর থেকে খালি কনটেইনারে মানুষ চলে যাচ্ছে— এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও ঝুঁকিপূর্ণ ঘটনা। এখানে বন্দরের গাফিলতির বিষয়টি জড়িত। ফলে সেখানে মালামাল কতটুকু নিরাপদ, সেটিও প্রশ্ন থেকে যায়। বলা হচ্ছে, খেলতে খেলতে ওই কিশোর কনটেইনারে উঠে পড়েছে।
তাহলে বন্দর কি খেলাধুলা করার জায়গা? বন্দরে দৈনিক আট থেকে ১০ হাজার গাড়ি আসা-যাওয়া করে। ১৪ থেকে ১৫ হাজার মানুষের কর্মব্যস্ততা। আমার মনে হয়ে, বন্দর কর্তৃপক্ষকে নিরাপত্তা নিয়ে আরও বেশি মনোযোগী হতে হবে।
+ There are no comments
Add yours