অপহরণ নয়, জমি সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিবেশীদের ফাঁসাতে মরিয়ম মান্নানের নেতৃত্বে রহিমা বেগম অপহরণ নাটক সাজানো হয়।
দেশব্যাপী আলোচিত খুলনার রহিমা বেগমকে কথিত অপহরণ মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে এমন তথ্য দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
আজ (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে দেশব্যাপী আলোচিত এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন মহানগর হাকিম আদালতে দাখিল করা হয়েছে। আজ বেলা সাড়ে ১১টায় পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান সংস্থাটির কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার বলেন, তদন্তে রহিমা বেগমকে অপহরণের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বরং জমি সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মরিয়ম মান্নানের নেতৃত্বে অপহরণের নাটক সাজানোর প্রমাণ মিলেছে। মূলত রহিমা বেগম অপহরণ হননি, তিনি স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে গিয়েছিলেন। তিনি ২৮ দিন আত্মগোনে ছিলেন। এই ২৮ দিন তিনি বিভিন্ন স্থান পরিবর্তন করেছেন।
গত বছরের ২৭ অক্টোবর দিবাগত রাতে তিনি মহেশ্বরপাশার বাসা থেকে আত্মগোপন করার পর ঢাকায় চলে যান। ঢাকায় কিছুদিন অবস্থান করার পর একটি ব্যাগে কিছু কাপড় ও ওষুধ দিয়ে মরিয়ম মান্নান তাকে বান্দরবান পাঠিয়ে দেন।
সেখানে কিছুদিন অবস্থান করার পর তিনি চলে যান ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী সৈয়দ গ্রামের জনৈক আবদুল কুদ্দুসের বাড়িতে। সংবাদ পেয়ে ওই বাড়ি থেকে রহিমা বেগমকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাকে উদ্ধারের পর তিনি কোনো কথাই বলছিলেন না। অনেক চেষ্টার পর কথা বলানো সম্ভব হলে তিনি জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে ঝামেলা আছে উল্লেখ করে তারা অপহরণ করেছে বলে বিবৃতি দেন।
পরবর্তীতে তাকে আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দীর জন্য পাঠানো হলে তিনি একই রকমের মিথ্যা বক্তব্য প্রদান করেন। যেহেতু আমরা মামলার তদন্ত কার্যক্রম শেষ করেছি এবং যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে তাদেরকে ঘটনাস্থল মহেশ্বরপাশায় পাওয়া যায়। সুতরাং তদন্ত শেষে এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মতামতে শুধুমাত্র জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিবেশীদের ফাঁসাতে মরিয়ম মান্নানের নেতৃত্বে এই অপহরণ নাটক সাজানো হয় বলে নিশ্চিত হয়।
সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ইতিপূর্বে অপহরণ মামলায় যে ৫ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল তারা এ ঘটনায় নির্দোষ। তদন্ত প্রতিবেদনে তাদেরকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে।
+ There are no comments
Add yours