আজ একুশে ফেব্রুয়ারি। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। কিন্তু কেন প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারি সারা বিশ্ব জুড়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে পালিত হয়?
স্বাধীনতার পর উর্দু ভাষাকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হলে পূর্ব পাকিস্তানে শুরু হয় প্রতিবাদ। বাঙালি জনগণের ভাষা আন্দোলনের মর্মন্তুদ ও গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত একটি দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। ১৯৫২ সালের এই দিনে (৮ ফাল্গুন, ১৩৫৯) বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে কয়েকজন তরুণ শহীদ হন। তাই এ দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।
কানাডার ভ্যানকুভার শহরে বসবাসরত দুই বাঙ্গালী রফিকুল ইসলাম এবং আবদুস সালাম প্রাথমিক উদ্যোক্তা দিসেবে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণার আবেদন জানিয়েছিলেন জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনানের কাছে ১৯৯৮ সালে। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং ২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে দিবসটি জাতিসঙ্ঘের সদস্যদেশসমূহে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে।
২০১০ সালের ২১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৫তম অধিবেশনে এখন থেকে প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করবে জাতিসংঘ। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে পাস হয়েছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের প্রস্তাবটি সাধারণ পরিষদের ৬৫তম অধিবেশনে উত্থাপন করে বাংলাদেশ। গত মে মাসে ১১৩ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘের তথ্যবিষয়ক কমিটিতে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে পাস হয়। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি যে চেতনায় উদ্দীপিত হয়ে বাঙালিরা রক্ত দিয়ে মাতৃভাষাকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছিল, আজ তা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে স্বীকৃতি লাভ করেছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ২০-২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও এর আশপাশের এলাকায় যানবাহন এবং জনসাধারণের চলাচলের ওপর কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আশপাশের বিভিন্ন সড়কে সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টা থেকে মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ বলবৎ থাকবে।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পরিদর্শন এবং রাজধানীতে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস শান্তিপূর্ণভাবে পালন নিশ্চিত করতে আজ রোববার ডিএমপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়। সোমবার বিকেল ৫টা থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বকশি বাজার-জগন্নাথ হল ক্রসিং সড়ক, চাঁনখারপুল-রোমানা চত্বর ক্রসিং সড়ক, টিএসসি-শিববাড়ী ক্রসিং সড়ক, উপাচার্য ভবন-ভাস্কর্য ক্রসিং সড়কে প্রবেশ নিষেধ থাকবে।
যেসব পয়েন্টে রাস্তা বন্ধ/রোড ডাইভারশন দেওয়া হবে সেগুলো হচ্ছে শাহবাগ ক্রসিং, টিএসসি ক্রসিং, দোয়েল চত্বর ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, শহিদুল্লাহ হল ক্রসিং, জিমনেশিয়াম মাঠ গেইট, রোমানা ক্রসিং, জগন্নাথ হল ক্রসিং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভাস্কর্য ক্রসিং, নীলক্ষেত ক্রসিং, পলাশী ক্রসিং, বকশি বাজার ক্রসিং, চাঁনখারপুল ক্রসিং। পলাশী ক্রসিং থেকে শহীদ মিনার হয়ে দোয়েল চত্বর, হাইকোর্ট ক্রসিং, টিএসসি ক্রসিং, শহিদুল্লাহ হল ক্রসিংয়ে হেঁটে চলাচল করা যাবে। ভিআইপিরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়াম মাঠে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঢাবি মোকাররম ভবন মাঠে এবং সর্বসাধারণ নীলক্ষেত ও পলাশী ক্রসিংয়ে গাড়ি পার্ক করতে পারবে।
+ There are no comments
Add yours