আজ বুধবার (১ মার্চ) জাতীয় বিমা দিবস। আস্থা সংকটের কারণে দেশের অর্থনীতিতে বিমা খাতের অবদান ১ শতাংশের নিচে।
এ উপলক্ষ্যে অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক বিভাগ ও বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) দেশব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে। ‘আমার জীবন আমার সম্পদ, বিমা থাকলে নিরাপদ’ এ প্রতিপাদ্যে পালিত হচ্ছে এবারের বিমা দিবস।
উল্লেখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার সময়ে সর্বস্তরের জনগণকে সংগঠিত করার মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা অর্জনের এক সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৯৬০ সালের ১ মার্চ তৎকালীন আলফা ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে এ অঞ্চলের প্রধান হিসেবে যোগদান করেন।
আর এ তারিখটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য ২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারি আইডিআরএ আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার ১ মার্চ কে ‘জাতীয় বীমা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেন। এরপর থেকে প্রতি বছরের এদিনে বিমা দিবস উত্থাপন করা হয়।
আইডিআরএ তথ্য মতে, দেশের বিমা খাতে জীবন ও সাধারণ বিমা কোম্পানির সংখ্যা ৮১টি। এ কোম্পানিগুলোতে গ্রাহকদের বিমার সংখ্যা রয়েছে ৮৮ লাখ ৬৮ হাজার ৪৩৬টি। অথচ ২০২১ সালেও বিমা সংখ্যা ছিল ৯৪ লাখ ২৩ হাজার ৪৬৫টিতে। অর্থাৎ ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে ৬ লাখ বিমা কমেছে। সাড়ে ১৭ কোটি মানুষ ও দেশের সম্পদের মাত্র ৮৮ লাখ বিমা রয়েছে। যা সম্পদ ও জনসংখ্যার দিক থেকে অতি সামান্য।
২০২২ সালে বিমার সংখ্যা ছিল ৮৮ লাখ ৮৬ হাজার ৪৩৬টি। সে বছরে মোট ৩০ লাখ ৬২ হাজার ৪৬৮টি বিমা দাবি ছিল গ্রাহকদের। এ গ্রাহকদের বিমার টাকার পরিমাণ ছিল ১৬ হাজার ৮২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৯ লাখ ১২ হাজার ৮৬৯টি বিমার মোট ১০ হাজার ২৬০ কোটি ৩৮ লাখ টাকার বিমা দাবি পরিশোধ হয়েছে। অর্থাৎ ২০২২ সালে গ্রাহকদের ১১ লাখ ৪৯ হাজার ৫৯৯টি বিমা দাবির ৬ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৮১টি বিমা কোম্পানিগুলো।
সূত্র জানায়, ২০২১ সালে বিমা দাবির পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ৪৭৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৮ হাজার ৬৫৬ কোটি ২ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে কোম্পানিগুলো। গ্রাহকদের প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার বিমা দাবি পরিশোধ করেনি।
প্রাণঘাতী করোনার আগের বছর ২০১৯ সালে বিমা দাবির পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৮২৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। দাবি পরিশোধ করেছে ৭ হাজার ৮৪০ কোটি ৪২ লাখ টাকা। তার আগের বছর ২০১৮ সালে ১০ হাজার ৪৬৫ কোটি ৯১ লাখ টাকার বিমা দাবি ছিল। তার মধ্যে ৭ হাজার ৭৯৮ কোটি ৬ লাখ টাকার বিমা দাবি পরিশোধ করেছে।
আইডিআরএর তথ্য মতে, যেসব কোম্পানি গ্রাহকদের বিমা দাবি পরিশোধে গাফিলতি করছে সেগুলো হচ্ছে- বায়রা লাইফ ইনস্যুরেন্স, সানলাইফ ইনস্যুরেন্স, সানফ্লাওয়ার ইনস্যুরেন্স, হোমল্যান্ড লাইফ ইনস্যুরেন্স, প্রাইম ইসলামী লাইফ, পদ্মা ইসলামী লাইফ এবং ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স ইত্যাদি। সম্প্রতি এসব কোম্পানির এমডি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গ্রাহকরা মামলাও করেছে। বেশি কিছু কোম্পানির এমডি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালের শেষে গ্রস প্রিমিয়ামের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৮১২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে জীবন বীমার গ্রস প্রিমিয়াম ১১ হাজার ৩৯৯ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আর সাধারণ বিমা (নন লাইফ) ৫ হাজার ৪১৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
+ There are no comments
Add yours