রানা মোল্লা,রামগড় (খাগড়াছড়ি)
পাহাড়ে প্রায় দু’যুগের বেশি ধরে সশস্ত্র আন্দোলন চলার পর ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর তৎকালীন আওয়ামীলীগ সরকার ও জনসংহতি সমিতির(জেএসএস)মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি।গতকাল ছিলো পার্বত্য শান্তিচুক্তির ২৩ বছর পূর্তি। সে উপলক্ষে আজ নিজ রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন রামগড় উপজেলা পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের ২৩ বছরপূর্তি উপলক্ষে পার্বত্য এলাকার সব অধিবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে বিশ্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি একটি অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।বর্তমান সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সর্বত্র শান্তি বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে জাতির পিতার সুখী-সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হবেন। পার্বত্য শান্তিচুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতাও কামনা করেন।তিনি আরো বলেন শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর থেকে পাহাড়ে শান্তির সুবাতাস বইতে শুরু করেছে, লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। চুক্তির ফলে স্বাভাবিকতা ফিরে আসায় দূর পাহাড়ের বুক চিরে রাত-দিন ছুটছে যানবাহন। এক সময় জেলার বাইরের অন্য জেলার সঙ্গে ৩টার পর যোগাযোগ করার মতো কোনো ব্যবস্থা ছিল না। পাহাড়ের পর্যটন স্পট সাজেক ছিল আতঙ্কিত ও বিচ্ছিন্ন, যোগাযোগ ছিল নিষিদ্ধ। চুক্তির ফলে সেই সাজেক পর্যটন স্পট আজ বাংলাদেশের সর্বত্র সুনাম ছড়িয়েছে। গড়ে উঠেছে বড় বড় হোটেল-রেস্তোরাঁ, প্রতিনিয়ত আসছে শত শত পর্যটক। এছাড়া সারাদেশে সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় পার্বত্য এলাকায় বিগত সময়ে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। পাহাড়ে শান্তির পাশাপাশি সেখানে বসবাসকারীদের আর্থ-সামাজিক জীবনেও এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন।পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যাপক ভূমিকা রাখায় বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।সংবাদ সম্মেলনে তিনি খাগড়াছড়ি আসনের সাংসদ ও শরনার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্রলাল ত্রিপুরা এমপির উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরে বলেন তার একান্ত প্রচেষ্টায় খাগড়াছড়িতে শিক্ষা,যোগাযোগ ও আর্থ সামাজিক ব্যবস্থার ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিবদমান চারটি সশস্ত্র গ্রুপের মধ্যকার আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে গুম-খুন-অপহরণ চাঁদাবাজি প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে।এসব সংগঠনের লাগাম টেনে ধরতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও সিটিজি জার্নালের সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক,হেয়াকো বনানী কলেজের অধ্যক্ষ ফারুক উর রহমান,রামগড় প্রেসক্লাবের সভাপতি শ্যামল রুদ্র,সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসাইন,কোষাধ্যক্ষ শুভাশিস দাশ,সাংবাদিক নিজাম উদ্দীন,সাংবাদিক রতন বৈষ্ণব ত্রিপুরা,শাহাদাত হোসেন কিরন,মোশারফ হোসের সহ প্রমুখ।
+ There are no comments
Add yours