উচ্চ মূল্যস্ফীতি প্রভাবে কমেছে সঞ্চয় প্রবণতা অন্যদিকে ৯ শতাংশ সুদের কারণে উচ্চ সুদে আমানত নিতে পারছে না ব্যাংক। ফলে তারল্য সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের অন্যতম শর্ত সুদহার বাজারভিত্তিক করা।
এমন পরিস্থিতিতে অনড় সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তুলে দেওয়া হচ্ছে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ ঋণের সুদহার।
আজ (১৯ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি সংক্রান্ত এক বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এ সময় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্বাহী পরিচালক ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ব্যাংকাররা জানান, ব্যাংকগুলো অনেক দিন ধরেই সুদহারের সীমা তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। কেননা ঋণে ৯ শতাংশ সুদের সীমা থাকায় আমানতে সুদ বাড়াতে পারছে না ব্যাংকগুলো। আবার সুদ না বাড়িয়েও ঋণ পাচ্ছে না। আইএমএফের সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণের অন্যতম শর্ত সুদহার বাজারভিত্তিক করা। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক গবেষণা প্রতিবেদনেও সুদহারের সীমা প্রত্যাহার অথবা বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, নতুন মুদ্রানীতি নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। আগামী জুনের তৃতীয় সপ্তাহে মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে। চলমান মুদ্রানীতির কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও আগামী মুদ্রানীতিতে কী কী থাকবে বৈঠকে সেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় মুদ্রানীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রা সরবরাহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, বৈদেশিক সম্পদ কতটুকু বাড়বে বা কমবে এর একটি পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, আমানতের সুদহার উন্মুক্ত করে দেওয়া ও ঋণ সুদহারে কিছুটা শিথিল করায় তা আমানতের সুদহার বাড়াতে সহায়তা করবে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় আমানতের সর্বনিম্ন সুদহার তুলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভোক্তাঋণের ক্ষেত্রে সুদহার ৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো যাবে। বর্তমানে ব্যাংকের সব ধরনের ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ। ভোক্তাঋণের সুদহার বাড়ানোর ফলে ব্যাংকগুলো তা ১২ শতাংশ পর্যন্ত করতে পারবে।
+ There are no comments
Add yours