বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের চর লড়াইপুরে পানির দামে বিক্রি হচ্ছে তরমুজ, ফেলা হচ্ছে নদীতে। বিগত বছর ভালো দাম পেলেও এ বছর তিনি খরচ তুলতে পারছেন না কৃষকরা। বিক্রির জন্য ট্রলারভর্তি তরমুজের চালান নিয়ে এসে কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে হতাশ তারা।
এমন হাজারো চাষির স্বপ্ন কীর্তনখোলা নদীতে ভাসিয়ে দিতে দেখা গেছে রোববার (২ এপ্রিল)। ফলন ভালো হলেও কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পেয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছেন দক্ষিণাঞ্চলের চাষীরা। মুনাফা তুলতে ‘পানির দামে’ পাইকারদের হাতে তুলে দিচ্ছেন ক্ষেতভর্তি তরমুজ।
আবার অনেকেই নদীতে ফেলে দিচ্ছেন। পাশাপাশি পরিবহনের অসুবিধার জন্য ট্রলারেই পচে যাচ্ছে মৌসুমের চাহিদা সম্পন্ন লাল সবুজের সোনালী শস্য। কৃষকরা বলছেন, তিন ধরণের ক্ষতির মুখে দাদনের টাকা পরিশোধ দায় হয়ে যাবে এবার।
বরিশালের সবচেয়ে বড় পাইকারী ফলের আড়ত পোর্ট রোড ঘুরে দেখা গেছে, তরমুজবোঝাই শত শত ট্রলার আড়তের খালে নোঙর করে আছে। কোনোটির পণ্য নামানো হচ্ছে। কোনোটিতে চাষি আর আড়তদারের মধ্যে দর কষাকষি চলছে। শ্রমিকরা ব্যস্ত ট্রলারের পর ট্রলার তরমুজ খালি করতে। ছিন্নমূল আর নিম্ন আয়ের মানুষ ফেলে দেওয়া তরমুজ সংগ্রহ করে নিচ্ছেন। গরুকেও ফেলে দেওয়া তরমুজ খেতে দেখা গেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খামার বাড়ি বরিশাল থেকে জানানো হয়েছে, বরিশাল জেলায় তরমুজ চাষে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭০০ হেক্টর জমিতে, আবাদ হয়েছে ১০৪৬ হেক্টর জমিতে। পিরোজপুরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০৬ হেক্টর জমিতে, ১১৬ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। ঝালকাঠিতে লক্ষ্যমাত্রা না থাকলেও ৫৫ হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদ হয়েছে। পটুয়াখালীতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ না হলেও আবাদ হয়েছে ২৮ হাজার ৭৪৫ হেক্টর জমিতে। বরগুনায় ১১ হাজার ৫১২ হাজার হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও আবাদ হয়েছে ১৫ হাজার ৮৩৮ হেক্টর জমিতে। ভোলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১ হাজার ২৪৯ হেক্টর জমিতে, ১৮ হাজার ৩৮৩ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।
বরগুনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু সৈয়দ মো. জোবায়েদুল আলম বলেন, তরমুজ উত্তোলনের ভরা মৌসুমে বৃষ্টিতে এবার কৃষক বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। গত বছর এই বৃষ্টি হয়েছিল উত্তোলন সময়ের পরে।
+ There are no comments
Add yours