হত্যা, অস্ত্র বা চোরাচালান মামলার আসামি এমন ৩৮ ব্যক্তি জনপ্রতিনিধি (কাউন্সিলর) হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে সর্বনিম্ন একটি ও সর্বোচ্চ ২০টি মামলা রয়েছে। মনোনয়নপত্র জমার পর যাচাই-বাছাই শেষে প্রার্থিতাও পেয়েছেন তারা।
রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক) নির্বাচনের ৩০টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর হতে চান ১১৭ জন প্রার্থী। আর এই ৩৮ জন ছাড়াও কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে অন্য ১৮ জন আগে মামলার আসামি ছিলেন। তবে তারা মামলা থেকে অব্যাহতি কিংবা খালাস পেয়েছেন।
কেউ কেউ বাদীর সঙ্গে আপস-মীমাংসার মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তি করেছেন। এছাড়া রাসিকের ১০টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে বৈধ প্রার্থী রয়েছেন ৪৬ জন। তাদের মধ্যে একজন প্রতারণার মামলায় কারাগারে রয়েছেন। এছাড়া দুজনের নামে মামলা থাকলেও তারা খালাস পেয়েছেন।
তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি ২০টি মামলা রয়েছে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে বিচারাধীন রয়েছে ১২টি মামলা। তদন্ত চলছে ছয়টির। ইতোমধ্যে তিনি দুটি মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন। তার বিরুদ্ধে থাকা বর্তমান মামলাগুলোর বেশিরভাগই বিস্ফোরক দ্রব্য আইন এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইনে। নগরীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী আফজাল হোসেনের মামলা রয়েছে ১৪টি। আগের তিনটি মামলায় তিনি খালাস পেয়েছেন। তার মামলাগুলোও বিস্ফোরক দ্রব্য ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনের।
৩০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী জামায়াত নেতা আবদুস সামাদের মামলার সংখ্যা ছয়টি। দুটি বিচারাধীন, আর চারটির তদন্ত চলছে। এর আগে তিনি চারটি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। ৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা চলমান, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর মতিউর রহমানের নামে একটি, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর আশরাফুল হাসান বাচ্চুর নামে দুটি, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের রবিউল ইসলাম চারটি, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী আলিফ আল মাহামুদ লুকেন তিনটি বিচারাধীন মামলার আসামি। আগে লুকেন ছয়টি মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন।
একটি মামলা চলমান ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী রেজাউন নবী আল মামুনের। তিনি ১৫টি মামলা থেকে আগে খালাস পেয়েছেন। ১০ নম্বরের প্রার্থী রাজ্জাক আহমেদ রাজন সাত মামলার আসামি, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী জহিরুল ইসলাম রুবেলের নামে তিনটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি অস্ত্র মামলা। তিনি একটি হত্যা মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন ২০১৮ সালে।
তিন মামলার আসামি নগরীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী আশরাফ হোসেন বাবু। এর মধ্যে দুটি বিচারাধীন আর একটি মামলার কার্যক্রম স্থগিত। একই ওয়ার্ডের প্রার্থী নুরুজ্জামান টিটোর নামে রয়েছে হত্যাসহ দুটি মামলা। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর মাহাতাব হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা চলছে শ্রম আদালতে।
বিচারাধীন দুটি মামলা রয়েছে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর বেলাল আহমেদের। ৩০ নম্বরের প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম পিন্টুর বিরুদ্ধে একটি মামলা বিচারাধীন, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান একটি মামলার আসামি।
দুটি মামলা রয়েছে ২ নম্বর ওয়ার্ডের নোমানুল ইসলামের আর চারটি মামলা বিচারাধীন ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের মহিউদ্দিন বাবুর বিরুদ্ধে। তিনটিতে খালাস পেলেও এখনও দুটি মামলা চলছে ২৯ নম্বরের প্রার্থী মাসুদ রানার। আদালতে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী রুহুল আমিনের বিচার চলছে আটটি মামলায়। তিনটি বিচারাধীন মামলা রয়েছে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমানের, ৫ নম্বরের হামিদুল ইসলাম সুজনের বিচারাধীন মামলা দুইটি। আর ২ নম্বরের প্রার্থী মুখলেসুর রহমানের মামলা সাতটি।
১৪ নম্বরের প্রার্থী আনোয়ার হোসেন ও মুরাদ আলী একটি করে মামলার আসামি। ১১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী আবু বাক্কার কিনুর নামেও জমিজমা সংক্রান্ত একটি মামলা রয়েছে। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী আখতার আহম্মেদ বাচ্চু, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের আবু জাফর বাবু, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মো. বদিউজ্জামান, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের মখলেসুর রহমান খলিল, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মনিরুজ্জামান, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের জানে আলম খান জনি, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের জাহাঙ্গীর আলম ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডের আমিনুল ইসলামের মামলা আছে একটি করে।
+ There are no comments
Add yours