মিয়ানরমারে ক্ষমতাসীন জান্তার অসহযোগিতার কারণে দায়িত্ব পালন করতে না পেরে অবশেষে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত নয়েলিন হেইজেল।
শুক্রবার জাতিসংঘের মহাসচিবের একজন মুখপাত্র এএফপিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এএফপিকে ওই মুখপাত্র বলেন, ‘চলতি জুন মাসেই পদত্যাগ করছেন নয়েলিন হেইজেল। আগামী ১২ জুন হতে যাচ্ছে তার শেষ কর্মদিবস।’
সিঙ্গাপুরের নাগরিক ও সমাজবিজ্ঞানী নয়েলিন হেইজেলকে ২০২১ সালের অক্টোবর মিয়ানমার সম্পর্কিত বিশেষ দূতের পদে নিয়োগ দেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তার মূল দায়িত্ব ছিল কারাবন্দী গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচির সঙ্গে ক্ষমতাসীন জান্তার আলোচনা ও বৈঠকের আয়োজন এবং এ সম্পর্কিত মধ্যস্থতা করা।
ক্ষমতা দখলের পাশাপাশি বন্দি করা হয় অং সান সুচি এবং তার রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির বিভিন্ন স্তরের হাজার হাজার নেতাকর্মীকেও। সুচির বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ তুলে রাজধানী নেইপিদোর একটি সামরিক আদালতে তার বিচার চলছে। ইতোমধ্যে মিয়ানমারের এই গণতন্ত্রপন্থী নেত্রীকে ৩০ বছর কারাবাসের সাজাও দিয়েছেন জান্তানিয়ন্ত্রিত ওই আদালত।
এদিকে ক্ষমতা দখলের পর থেকেই মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী জনগণ জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ শুরু করে। দেশব্যাপী সেই বিক্ষোভ দমনে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদেরকে এক পর্যায়ে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেয় জান্তা। তারপর থেকে এ পর্যন্ত পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে মিয়ানমারে প্রাণ হারিয়েছেন ৪ হাজারেরও বেশি মানুষ।
বর্তমানে দেশটির বিভিন্ন এলাকায় সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলোর সংঘাত হচ্ছে।
জান্তাপ্রধান ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সুচির সঙ্গেও দেখা করতে চেয়েছিলেন তিনি, কিন্তু অনুমতি পাননি। ফলে তার মিশন অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
অবশ্য জাতিসংঘের দূতদের মধ্যে নয়েলিন হেইজেলই যে সুচির সঙ্গে সাক্ষাতে ব্যর্থ হয়েছেন— এমন নয়। তার আগে জাতিসংঘে বিশেষ দূত ক্রিস্টেন স্ক্র্যানার বার্গনার এবং এশিয়া বিষয়ক দূত প্রাক সোখননকেও মিয়ানমারের কারবন্দি গনতন্ত্রপন্থী নেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দেয়নি জান্তা।
+ There are no comments
Add yours