আমির হোসেন, ঝালকাঠি প্রতিনিধি // আজন্ম প্রতিবন্ধী লিমার বাবা মারা গেছেন দুই বছর আগে। বাবার মৃত্যুর পর তার মা ফরিদা বেগম অন্যত্র চলে যাওয়ায় এখন বৃদ্ধ দাদিই তার বেঁচে থাকার একমাত্র ভরসা। যিনি পেশায় একজন ভিক্ষুক। ভিক্ষা করেই পেট চলে দাদী ও প্রতিবন্ধী নাতির।
নাতির জন্মনিবন্ধন না থাকায় সমাজ সেবা অফিসে মাসের পর মাস ঘুরেও করতে পারছেন না নাতির জন্য প্রতিবন্ধী ভাতা। শুধুমাত্র একটি জন্মনিবন্ধনের জন্য আটকে আছে লিমার প্রতিবন্ধী ভাতা।নিজের মৃত্যুর পর অসহায় নাতির কি হবে সেই চিন্তায় দূর্বিষহ দিন কাটছে দাদী আনজেরা বেগমের।
জানা গেছে, ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার পৌর এলাকার ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত-জাহাঙ্গীর হাওলাদারের প্রতিবন্ধী মেয়ে লিমা আক্তার(১৩) জন্ম থেকেই নানান শারিরীক সীমাবদ্ধতা নিয়ে বেঁচে আছেন। অন্যের সাহায্য ছাড়া নিজের কোন কাজই করতে পারেন না। কথা বলতে গেলে মুখ জড়িয়ে যায় ঠিক মতো উচ্চারন করতে পারেন না। একাকি চলাফেরাও করতে পারেন না। বৃদ্ধ দাদি তার খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু সবকিছুতে সহায়তা করেন। বাবা মা কে হারিয়ে তার সাথেই বসবাস করছেন।
দাদি আনজেরা বেগম বলেন, আমার পঙ্গু ছেলেটার মৃত্যুর পরই তার মা ফরিদা বেগম অন্যত্র চলে যায় এরপর থেকেই সে আমার কাছে আছে। আমি বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করে যা পাই তাই দিয়ে দুজনে কোন রকম খেয়েপড়ে আছি। এখন আমার বয়স হয়েছে যে কোন সময় মারা যেতে পারি। যদি ওর জন্য একটা ভাতার ব্যবস্থা করতে পারতাম তাহলে মনটা শান্তি পেতো। কিন্তু জন্মনিবন্ধন না থাাকায় সবকিছু আটকে আছে। এর জণ্য নলছিটি পৌরসভায় অনেকবার গিয়েছি কিন্তু কোন কাজ হয়নি। এখন নিরুপায় হয়ে সেই আশা ছেড়ে দিয়েছি।
এ ব্যাপারে নলছিটি পৌর মেয়র বলেন, আমার কাছে এই ধরনের কোন লোক আসেনি বা আসলে এভাবে বিস্তারিত খুলে বলেনি। এখন যদি কেউ আসে আমি আমার পক্ষ থেকে যতটুকু সহায়তা করা দরকার সবটুকুই করবো।
নলছিটি সমাজসেবা কর্মকর্তা বলেন, এখন সবকিছুই অনলাইন সিস্টেম তাই ভাতার আবেদন করার জন্য জাতীয়পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধনের প্রয়োজন। সেটা নিয়ে আসতে পারলে আমাদের এখান থেকে যতদ্রুত সম্ভব তার প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করে দেয়া হবে।এছাড়া সম্ভব নয় বলেও তিনি জানান।
+ There are no comments
Add yours