বাংলাদেশের মৎস্য খাতে অভাবনীয় বিপ্লব হয়েছে মন্তব্য করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, মৎস্য খাতকে আরও যুগোপযোগী করতে সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্ট চলছে।
এ প্রকল্পের আওতায় দেশে ১০০টি মডেল ভিলেজ ও ৪৫০টি আধুনিক মৎস্যজীবী গ্রাম উন্নয়ন করা হচ্ছে। পাশাপাশি মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানির বাজার সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের জন্য মান নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গ্রামীণ মৎস্য চাষি ও জেলেদের তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে দেশব্যাপী জেলে নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র, স্মার্টকার্ড প্রদান এবং ডাটাবেজ তৈরি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ১৫ হাজার মৎস্যজীবীকে ডিজিটাল আইডি কার্ড এবং এক হাজার মৎস্যজীবীকে স্মার্ট আইডি কার্ড দেওয়া হয়েছে।
রোববার (১১ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘সুনীল অর্থনীতি সুফল অর্জনে সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্ট’ নিয়ে দেশের স্বনামধন্য সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী। আলোচনায় দেশের গণমাধ্যমে কর্মরত সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিকরা অংশ নেন।
মন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারে শুঁটকি পল্লী বানানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এই পল্লীটি হবে শতভাগ আধুনিক। এতদিন একটি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে শুঁটকি তৈরি হতো। এখন মাছ আহরণ থেকে শুরু করে একজন কাস্টমারের হাতে পৌঁছানো পর্যন্ত হাতের কোনো কাজ থাকবে না। অর্থাৎ মৎস্য খাতকে পুরোপুরি আধুনিকায়ন করার জন্য যা যা করার তাই করা হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, অতীতে মাছের ভেতরে নানা ধরনের অপকর্ম হয়েছে। মাছে ইনজেকশন বা প্লেট দিয়ে নানা কেমিক্যাল ঢুকানো হতো। এজন্য অত্যাধুনিক ল্যাব এনেছি। এখন উৎপাদন থেকে শুরু করে বিপণন পর্যন্ত সব কিছুতে হাতের কোনো ছোঁয়া থাকবে না। আন্তর্জাতিক ক্রেতাও এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে প্রকল্প পরিচালক ড. মো. আব্দুল আলীম জানান, সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের আওতায় দেশের উপকূলীয় ১৬টি জেলার ৭৫টি উপজেলা এবং ১৫০টি ইউনিয়নে মৎস্যজীবীদের প্রশিক্ষণ, প্রণোদনা, মডেল জেলে গ্রাম নির্মাণসহ সমুদ্রে নিয়মিত মনিটরিং করার কাজ হচ্ছে। বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের সহায়তায় প্রকল্পটি ২০২৩ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রকল্পটি ২০২৭ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ টেলিভিশনের জাহিদুল ইসলাম বলেন, আজ যে ব্লু ইকোনমির কথা বলা হচ্ছে, বিশ্বের অনেক দেশ অনেক আগেই এ কাজ শেষ করেছে। তারপরও এই উদ্যোগের জন্য বাংলাদেশকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নে আমাদের দেশে যে প্র্যাকটিস হয় সেখানে থেকে এই প্রকল্প কতটুকু মুক্ত থাকতে পারবে তার ওপর নির্ভর করবে প্রকল্পের সফলতা।
নাগরিক টিভির বার্তা সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বাংলাদেশের পরিবেশ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, পানি দূষিত হচ্ছে। এর মধ্যে কীভাবে বিষমুক্ত মাছ উৎপাদন করা যায় তার দিকে বেশি নজর দেওয়ার সময় এসেছে।
অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সচিব ড. নাহিদ রশীদ, প্রকল্প এবং মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
+ There are no comments
Add yours