বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারিতে ব্যাংকটির আলোচিত সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুসহ ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সংস্থাটির দায়ের করা মোট ৫৯ মামলার চার্জশিটের মধ্যে ৫৮টি মামলার তদন্তে নতুন আসামি হিসাবে আলোচিত আবদুল হাই বাচ্চু ও কোম্পানি সচিব শাহ আলম ভূঁইয়াকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
অথচ ২০১৫ সালে দায়ের করা কোনো মামলাতেই বাচ্চুকে আসামি করা হয়নি। যে কারণে দুদককে বারবার বিভিন্ন প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয়েছে।
মামলার দীর্ঘ ৮ বছর পর চার্জশিটে আবদুল হাই বাচ্চুকে আসামি করার বিষয়ে দুদকের ওপর কোনো চাপ ছিল কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সোমবার (১২ জুন) সংস্থাটির সচিব মো. মাহবুব হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দুদক একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। কোনো চাপের মুখে পড়ে কাজ করে না। তার ক্ষেত্রেও কোনো চাপ ছিল না।’
অনুমোদিত চার্জশিটে আসামিদের বিরুদ্ধে মোট ২ হাজার ২৬৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে ৪৬ জন ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ১০১ জন গ্রাহকসহ বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তি রয়েছেন। যেখানে ব্যাংকের সাবেক এমডি কাজী ফখরুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে ৪৮টি মামলায়। আর ডিএমডি ফজলুস সোবহান ৪৭টি, কনক কুমার পুরকায়স্থ ২৩টি, মো. সেলিম আটটি, বরখাস্ত হওয়া ডিএমডি এ মোনায়েম খানকে ৩৫টিতে আসামি করা হয়েছে।
অনুমোদিত চার্জশিটে আসামির তালিকার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা হলেন- ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মো. সেলিম, এমদাদুল হক, ফজলুল সোবহান, মহাব্যবস্থাপক মো. মনিরুজ্জামান ও শাহজাহান মোল্লা, ডিজিএম খান ইকবাল হাসান, জিম মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. আশরাফুজ্জামান, ব্যাংকের শান্তিনগর শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক মো. জালাল উদ্দিন, এজিএম এসএম আনিসুর রহমান চৌধুরী, সাবেক ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আলী, গুলশান শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক শীপার আহমেদ, একই শাখার ক্রেডিট ইনচার্জ এসএম জাহিদ হাসানসহ দিলকুশা শাখা ও স্থানীয় কার্যালয়ের আরও কয়েকজন কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে শেখ আবদুল হাই বাচ্চু চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে ২০১৩ সালের মার্চ পর্যন্ত বেসিক ব্যাংক ৬ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা ঋণ দেয়। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকাই নিয়ম ভেঙে দেওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুসন্ধানে। ফলে ২০১৪ সালে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অপসারণ করা হয়।
সে বছরের ২৯ মে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিছুদিন পর ৪ জুলাই শেখ আবদুল হাই বাচ্চু পদত্যাগপত্র জমা দেন।
+ There are no comments
Add yours