ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও প্রতিহিংসা থেকে উচিৎ শিক্ষা দিতে সাংবাদিক নাদিমের উপর হামলার পরিকল্পনা করেন সাধুরপাড়া ইউনিউনের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু।
সে অনুযায়ী ঘটনার দিন নিজের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে হামলা চালানো হয়। হামলার সময় ঘটনাস্থলের কাছেই অবস্থান করে নির্দেশনাও দিচ্ছিলেন তিনি।
শনিবার ১৭ জুন সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
সাংবাদিক নাদিম খুনের প্রধান আসামি সাধুরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু ও তার দুই সহযোগী মনিরুজ্জামান মনির ও জাকিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের বিষয় জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। শনিবার ১৭ জুন সকালে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিন বিকেলে সাংবাদিক নাদিমের উপর আরেক হামলাকারী রেজাউল করিমকে বগুড়া থেকে গ্রেপ্তারের কথাও জানায় র্যাব। খন্দকার আল মঈন বলেন, সাংবাদিক নাদিম সম্প্রতি বাবুর অপকর্ম নিয়ে অনলাইন পোর্টালে কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাবু ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিক নাদিমকে বিভিন্নভাবে হুমকিসহ তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন।
পরে ময়মনসিংহের সাইবার ট্রাইব্যুনাল মামলাটি খারিজ করে দেন। মামলা খারিজের বিষয়টি নিয়ে ভিকটিম নাদিম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়ায় বাবু আরও ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিক নাদিমকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন।
তিনি বলেন, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪ জুন বুধবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে ভুক্তভোগী সাংবাদিক নাদিম বাড়ি ফেরার পথে বকশীগঞ্জ বাজারের পাটহাটি এলাকায় বাবু তার সন্ত্রাসীদের নিয়ে নির্জন স্থানে ওৎ পেতে থাকেন। সাংবাদিক নাদিম তার সহকর্মীসহ মোটরসাইকেল যোগে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে বাবুর সন্ত্রাসীরা তাকে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন।
পরে পেছন থেকে দৌড় দিয়ে বাবুর আরও কয়েকজন লোক এসে তাকে মারতে মারতে পাশের একটি অন্ধকার গলিতে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যান এবং এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন। র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ওই সময় প্রধান অভিযুক্ত চেয়ারম্যান বাবু ঘটনাস্থলের কাছে থেকে পুরো ঘটনার নেতৃত্ব দেন।
সাংবাদিক নাদিমের সহকর্মী তাকে বাঁচাতে গেলে বাবুর সন্ত্রাসীরা তাকেও মারধর করে। একপর্যায়ে ভিকটিম নাদিমের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে বাবু ও তার সন্ত্রাসী গ্রুপ দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরের দিন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাংবাদিক নাদিম মৃত্যুবরণ করেন।
+ There are no comments
Add yours