বেশ কিছুদিন ধরে চলমান টানা বৃষ্টিপাতের ফলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে পার্বত্য জেলা রাঙামাটির বিভিন্ন উপজেলা বন্যা কবলিত হয়েছে।
বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি। পানিবন্দি হয়ে আছেন কয়েক হাজার মানুষ। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পাহাড়ী অঞ্চল হলেও অতিবৃষ্টির ফলে উজানের ঢলে এখানকার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।
জেলার বরকল, বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, লংগদু, বিলাইছড়ি উপজেলা বন্যা কবলিত হয়েছে। এরমধ্যে বাঘাইছড়ি এবং জুরাছড়ি উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি খুবই নাজুক। বাঘাইছড়ি উপজেলার বঙ্গলতলী, বাঘাইছড়ি, রুপকারী, মারিশ্যা, আমতলী ও খেদারমারা ইউনিয়নসহ বাঘাইছড়ি পৌরসভার ১, ২, ৪, ৬ ও ৭নং ওয়ার্ডের নিচু অঞ্চলের বসতবাড়ি, আবাদি জমি ও রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি প্রবেশ করেছে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়েও।
এদিকে বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি। আউশ, আমনের ধানখেতসহ বেশকিছু সবজির জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। রাঙামাটি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলার ১০টি উপজেলা মিলিয়ে ২০ হাজার ৭১৬ হেক্টর ফসলি জমির মধ্যে ৩৮৩৪ হেক্টর জমি বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। যার মধ্যে ২৩০৩ হেক্টর ফসলি জমি সম্পূর্ণ এবং ১৫৩১ হেক্টর জমি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার বলেন, বাঘাইছড়ির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়াতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লোকজন। পাহাড়ি ঢলে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়েও পানি ঢুকে গিয়েছিল। বাঘাইছড়ি পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসন সমন্বয় করে বন্যার্তদের সাহায্য সহযোগিতায় কাজ করছে। পাশাপাশি মারিশ্যা জোনও বন্যার্তদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে। এখনো পর্যন্ত আমরা ৪০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পেয়েছি।
এদিকে জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের সরকারি মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। অনেক উপজেলা দুর্গম হওয়াতে ত্রাণ পৌঁছাতে ও যোগাযোগ করতে বেগ পেতে হচ্ছে। জেলায় মোট ২৪২টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৪৫০০ এর মত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
+ There are no comments
Add yours