দেশের রেস্টুরেন্ট ও বারগুলোতে কারা লাইসেন্স (পারমিট) নিয়ে মদ পান করছেন, তাদের তালিকা চেয়েছে সরকার। তালিকা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) ওপর। তবে, পারমিটধারীদের বিষয়ে তথ্য দিতে আপত্তি জানিয়েছেন বার-মালিকরা।
আগামী ২ অক্টোবরের মধ্যে এ তালিকা তৈরি করে দিতে বলা হয়েছে। তবে, এ তথ্য দিয়ে কী করা হবে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কারও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
আগস্টের শেষের দিকে জাতীয় সংসদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির বৈঠক থেকে এ তালিকা তৈরির বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এরপর তাদের পক্ষ থেকে পুলিশ সদরদপ্তরে বিষয়টি জানানো হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সদরদপ্তর এসবিকে তালিকা করার দায়িত্ব দেয়।
সূত্র জানায়, শুধু লাইসেন্সধারী নয়, দেশের বার-রেস্টুরেন্টগুলোতে কারা অবৈধভাবে মদ কিনছেন এবং পান করছেন, পাশাপাশি মাদক-কারবারিদেরও তালিকা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে, লাইসেন্সধারী মদপানকারীদের তালিকা করার বিষয়টি এবারই প্রথম। পুলিশ সদরদপ্তর হয়ে সরকারের ওই নির্দেশনা আসে সিটি এসবির কাছে। এরপর সিটি এসবি তালিকা প্রস্তুতের জন্য এলাকাভিত্তিক ইনচার্জকে নির্দেশনা দিয়েছে।
সিটি এসবির ইনচার্জদের কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠান সিটি এসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ছুফি উল্লাহ্। চিঠিতে বলা হয়েছে, পুলিশ সদরদপ্তরের নির্দেশে আপনার (সংশ্লিষ্ট অফিসার) জোন এলাকার লাইসেন্সধারী, লাইসেন্সবিহীন ক্রেতা এবং মদ ও মাদক-কারবারিদের তথ্যাদি সংগ্রহ করে সফট কপি (ডকফাইল) ই-মেইল ও হোয়াটসঅ্যাপ এবং হার্ডকপি ডাকযোগে সিটি এসবির কাকরাইল অফিসে পাঠানোর অনুরোধ করা হচ্ছে।
চিঠিতে এসবিকে থানা এলাকায় লাইসেন্সধারী মদ বিক্রি/বারের সংখ্যা, লাইসেন্সধারী মদের ক্রেতা/ভোক্তার সংখ্যা, মদ ক্রয়ের হিসাব, মদ বিক্রির হিসাব, লাইসেন্সধারী ভোক্তার সঙ্গে পরিমাণ সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না, এসব বিষয়ে তথ্য দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদরদপ্তরের কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি। তবে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) সমমর্যাদার এক কর্মকর্তা বলেন, সরকার থেকে এ তালিকা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি লাইসেন্সধারী ব্যক্তিরা কী পরিমাণ মদ পান করছেন, সে বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে। ফিল্ড অফিসাররা মাঠে আছেন, তারা এ বিষয়ে তথ্য তুলে ধরবেন। ২ অক্টোবরের মধ্যে হালনাগাদ তথ্য পাওয়া যাবে।
সাধারণত মদ পানের লাইসেন্স বা পারমিট প্রদান এবং নবায়ন করে থাকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। কেন পুলিশের কাছে এ ধরনের তথ্য দিতে হবে— এ নিয়ে ক্ষুব্ধ বার-মালিকরা।
অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা ২০২২ এর বিধি-৭ অনুযায়ী, লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ মদ ও মাদক কেনা-বেচার তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে। অর্থাৎ লাইসেন্সধারী মদ-ব্যবসায়ীদের থেকে মদ ও মাদক সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের এখতিয়ার শুধুমাত্র মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের।
এসবির এসব তথ্য চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সংসদীয় কমিটি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে গত ১৭ সেপ্টেম্বর চিঠি দিয়েছেন বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড বার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মেজর (অব.) এম জাহাঙ্গীর হোসেইন।
+ There are no comments
Add yours