ঐক্যবদ্ধ হতে পারেনি ইসলামী দলগুলো

Estimated read time 1 min read
Ad1

অভিন্ন দাবি নিয়ে রাজপথে থাকলেও দেশে সক্রিয় ইসলামী দলগুলোর মধ্যে বিভক্তি দূর হচ্ছে না।

আলাদা প্ল্যাটফর্মে থেকেই রাজপথের আন্দোলনে সক্রিয় থাকার চেষ্টা করছে তারা। ‘তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি’ হওয়ার লক্ষ্যে সব ইসলামী দল নিয়ে আলাদা জোট গড়ার উদ্যোগ থাকলেও নানা কারণে তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না।

এর মধ্যে আবার আগামী নির্বাচনকে ঘিরে লাভ-ক্ষতির হিসাবনিকাশে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কোনো কোনো দলের নেতারা। এসব সত্ত্বেও বেশিরভাগ ইসলামী দল বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সরকারবিরোধী আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে রাজনীতিতে নানমুখী সমীকরণ হচ্ছে। দল গুছিয়ে নিজেদের মতো ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একদফা দাবিতে আন্দোলনে রয়েছে বিএনপি ও এর মিত্র দলগুলো।

এই পরিস্থিতিতে বসে নেই বেশিরভাগ ইসলামী দলও। একই প্ল্যাটফর্মে না থাকলেও বেশিরভাগ দলই আলাদা কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে সক্রিয়। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে রাজনীতিতে ইসলামী দলগুলোর সক্রিয়তা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশে ইসলামী দলগুলো নানাভাগে বিভক্ত। চিন্তাচেতনার দিক থেকে এসব দলের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। যেমন হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর আদর্শগত পার্থক্য রয়েছে। আবার খেলাফত মজলিশের সঙ্গে জামায়াত এবং জামায়াতের সঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশেরও মতপার্থক্য রয়েছে। এভাবে সব ইসলামিক দলের চিন্তাচেতনায় কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। তবে দীর্ঘদিন ধরে সব ইসলামী দলকে এক ছাতার নিচে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চললেও তা বাস্তবে রূপ নেয়নি।

ইসলামী দলগুলো তাদের মতপার্থক্য কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে ধারাবাহিকভাবে বেশ কয়েকটি আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছে বলে জানা গেছে। এই প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা, অভ্যন্তরীণ ছোট ছোট বিভক্তিগুলো কেটে যাবে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে সব ইসলামী দলের একটি ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম তৈরি হবে বলে তাদের আশা। সেই প্ল্যাটফর্মের মূল লক্ষ্য হবে সরকার পতনের আন্দোলন এবং বাংলাদেশকে একটি ইসলামী প্রজাতন্ত্র বানানো। বিভিন্ন পর্যায়ে সেই প্রক্রিয়া চলমান আছে বলে একাধিক সূত্র দাবি করলেও প্রকাশ্যে কোনো তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ৯টি ইসলামী ও সমমনা দল নিয়ে জোট গঠনের চেষ্টা করছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, খেলাফত মজলিশ, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, এবি পার্টি, এনডিপি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম (মনসুরুল-ইকরাম) ও এনডিএফের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন উদ্যোক্তারা। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবির বিষয়ে প্রায় সব ইসলামী দলই মোটামুটি একমত। চলমান প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতায় এসব দলের মধ্যে জোট অথবা নির্বাচনী সমঝোতা হতে পারে।

বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মোট সংখ্যা ৪৪টি। এর মধ্যে ইসলামী বা ইসলামপন্থি দলের সংখ্যা ১০টি। নিবন্ধন না থাকা ইসলামী দল বা সংগঠন কতগুলো—এর কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ইসলামী দলগুলো হলো ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, খেলাফত মজলিশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, জাকের পার্টি ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ।

জানা গেছে, লাগাতার কর্মসূচি দিয়ে মাঠে সক্রিয় আছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। ১৬ জুলাই থেকে দেশের সব থানা ও উপজেলায় দলটি ৬ শতাধিক ‘তৃণমূল প্রতিনিধি সম্মেলন’ করেছে। সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত সব জেলা ও মহানগরে সমাবেশ এবং ওলামা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়া অক্টোবর মাসজুড়ে প্রতিটি জেলা ও মহানগরে ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলন ও সিরাতুন্নবী মাহফিল, ১ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত থানা-উপজেলায় ইমাম, মুয়াজ্জিন ও ওলামা সম্মেলন এবং ডিসেম্বরজুড়ে সারা দেশে তাফসিরুল কোরআন মাহফিল ও গণ-কোরআন শিক্ষা কর্মসূচি পালন করবে চরমোনাই পীরের দল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পূর্বঘোষিত ১৩ দফা দাবি, নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলন করতে চায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। এ বিষয়ে একাধিক প্রস্তুতি সভা করেছেন সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা। গত বৃহস্পতিবারও কেন্দ্রীয় নেতারা বৈঠক করেছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক https://khoborbangla24.net

বিশ্বজুড়ে দেশের খবর

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours