২০২৪ সালের ৪ জানুয়ারিকে ভোট গ্রহণের সম্ভাব্য তারিখ ধরেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঘোষণা হতে পারে তপশিল। তার আগে চলতি মাসের মধ্যেই নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কেনাকাটা সম্পন্ন করা হবে বলে ইসি সূত্রে জানা গেছে।
সূত্রগুলো বলছে, রেওয়াজ অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল জাতির উদ্দেশে ভাষণের মাধ্যমে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করবেন। তার আগে সিইসি এবং অন্য কমিশনাররা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ভোটের তারিখসহ সার্বিক বিষয়গুলো তাকে অবহিত করবেন।
সংবিধান অনুযায়ী, চলতি সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিন অর্থাৎ ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। সেক্ষেত্রে ১ নভেম্বর শুরু হচ্ছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ক্ষণগণনা। সেক্ষেত্রে আগামী ৪ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের দিন ধরেই সব প্রস্তুতি সারছে কমিশন।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর গতকাল রোববার বলেছেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ ঠিকঠাক আছে। কমপক্ষে ৪৫ দিন সময় ধরে নভেম্বরে তপশিল ঘোষণা করা হবে। তবে ঠিক কোন সপ্তাহে তপশিল, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।’
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ‘কোনো দলের আসা বা না আসা তাদের রাজনৈতিক বিষয়। আমাদের সংবিধানের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল গত শনিবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘কে নির্বাচনে এলো, কে এলো না; জনগণ যদি আসেন, ভোটাররা যদি আসেন, তারা যদি ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন, তাহলে নির্বাচনে বড় সফলতা আসবে।’
নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (ইটিআই) মহাপরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান কালবেলাকে বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সেপ্টেম্বরে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে ভোটের প্রশিক্ষণ শুরু হয়। ভোটের এক সপ্তাহ আগ পর্যন্ত ১০ লাখের মতো ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এ ছাড়া মাঠ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও প্রথমবারের মতো প্রশিক্ষণের আওতায় এনেছে ইটিআই।’
উল্লেখ্য, সর্বশেষ হালনাগাদ অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯০ লাখ ৬১ হাজার ১৫৮। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা মিলিয়ে ১০-১২ লাখের মতো জনবল বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।
ইসি ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী, ইতোমধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে। আইনি কাঠামোর সংস্কারও হয়েছে। যদিও এতে ইসির ক্ষমতা হ্রাস-বৃদ্ধি নিয়ে নানা বিতর্ক তৈরি হয়। সংসদীয় আসনের পুনর্বিন্যাসের কাজ শেষ হয়েছে। নির্বাচন সামনে রেখে এবার ১০টি আসনের সীমানায় পরিবর্তন এসেছে। নতুন দলের নিবন্ধনের কাজও শেষ হয়েছে। ভোটকেন্দ্রের খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। এতে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ১০৩টি আর ভোটকক্ষের সংখ্যা ২ লাখ ৬১ হাজার ৯১৪টিতে দাঁড়িয়েছে। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিরীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে।
এদিকে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলে বাধাদান ঠেকাতে এবার অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ই-ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অনলাইনে জামানতের টাকা পরিশোধেরও সুযোগ থাকবে। অন্যদিকে, ভোটকেন্দ্রের নাম ও ভোটার নম্বর খুঁজে পাওয়ার ভোগান্তি কমাতে ‘বাংলাদেশ ইলেকশন অ্যাপ’ নামে একটি অ্যাপ তৈরি করছে কমিশন। এই অ্যাপে ভোটারের তথ্যের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের জন্য রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটানিং অফিসার, ডিসি, এসপি, ওসিসহ নির্বাচনকেন্দ্রিক বিভিন্ন দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের পরিচয়, ফোন নম্বর দেওয়া থাকবে।
+ There are no comments
Add yours