আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িত শিশুদের বসানো হলো টুলে। এজলাসের নিচে বিচারক চেয়ার-টেবিল বসিয়ে কথা বললেন শিশুদের সঙ্গে। শিশু আইন অনুযায়ী তাকে বাহিনীর পোশাক খুলে স্বাভাবিকভাবে সাক্ষ্য দিতে হয়েছে, যেন তিনি যে পুলিশ এটা শিশুরা বুঝতে না পারেন।
আজ (২৩ অক্টোবর) এমন দৃশ্য দেখা যায় চট্টগ্রামের সপ্তম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে। ২০১৩ সালে প্রণীত শিশু আইনের বিধান মেনে পুরোপুরি শিশু আদালত গড়ে তোলা হয় কক্ষটিকে। চট্টগ্রামের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এভাবে শিশু আদালত গড়ে তোলায় খুশি শিশুদের পরিবার, আইনজীবী ও আদালত সংশ্লিষ্টরা। এভাবে প্রতি মাসে চারবার এই ট্রাইব্যুনালে শিশু আদালত বসবে।
জানা গেছে, আগে প্রথম অতিরিক্ত জেলা বা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িত শিশুদের বিচার হতো। ২০২০ সালে আইন সংশোধন করে দেশের সবগুলো নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালকে শিশু আদালত হিসেবে ঘোষণা করা হয়। শিশু আইনে শিশুদের জন্য আদালত কীভাবে গড়ে উঠবে তার বর্ণণা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এতদিন কাগজেই সীমাবদ্ধ ছিল এ নিয়ম। যথাযথভাবে বড়দের মতো শিশুদের বিচার হতো আদালতে।
তবে সোমবার সপ্তম চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে প্রথমবারের মতো এ আইনের নিয়ম মেনে শিশু আদালত বসানো হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের শিশু আইনের ১৭(৪) ধারায় বলা হয়েছে, যেসব দালান বা কামরায় এবং যেসব দিবস ও সময়ে প্রচলিত আদালতের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়, তাছাড়া যতদূর সম্ভব, অন্য কোনো দালান বা কামরায়, প্রচলিত আদালতের মতো কাঠগড়া ও লালসালু ঘেরা আদালতকক্ষের পরিবর্তে একটি সাধারণ কক্ষে এবং অন্য কোনো দিবস ও সময়ে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ব্যতীত শুধু শিশুর ক্ষেত্রে শিশু-আদালতের অধিবেশন অনুষ্ঠান করতে হবে।
একই আইনের ১৯ (২) ধারায় বলা হয়েছে, শিশু আদালতের আসন বিন্যাস এমনভাবে করতে হবে যেন সব শিশু বিচার প্রক্রিয়ায় মাতা-পিতা বা তাদের উভয়ের অবর্তমানে তত্ত্বাবধানকারী অভিভাবক বা কর্তৃপক্ষ বা আইনানুগ বা বৈধ অভিভাবক বা বর্ধিত পরিবারের সদস্য এবং প্রবেশন কর্মকর্তা ও আইনজীবীর, যতদূর সম্ভব, সন্নিকটে বসতে পারে।
১৯(৩) ধারায় বলা হয়েছে আদালতকক্ষে শিশুর জন্য উপযুক্ত আসনসহ প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য, প্রয়োজনে, বিশেষ ধরনের আসন প্রদানের বিষয়টি শিশু-আদালত নিশ্চিত করবে। ১৯ (৪) ধারায় উল্লেখ রয়েছে অন্য কোনো আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, শিশু আদালতে বিচার চলাকালীন, আইনজীবী, পুলিশ বা আদালতের কোনো কর্মচারী আদালতকক্ষে তাদের পেশাগত বা দাপ্তরিক ইউনিফর্ম পরিধান করতে পারবেন না।
+ There are no comments
Add yours