বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠার এক দফা দাবিতে আগামীকাল শনিবার ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।
এই মহাসমাবেশে যোগ দিতে রংপুর মহানগরীসহ বিভাগের আট জেলা থেকে দশ হাজার নেতাকর্মীকে ঢাকায় যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। ইতোমধ্যেই ৫ হাজার হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় পৌঁছে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়েছেন। শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) বাকিরা চলে যাবেন বলে দলের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে পুলিশি গ্রেপ্তার, হয়রানি ও তল্লাশি এড়াতে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা অনুসরণ করছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। ঢাকায় মহাসমাবেশের উদ্দেশ্যে যাওয়া নেতাকর্মীদের দলবদ্ধ ভাবে না যাওয়া, হোটেল-মেসে না থাকা, স্মার্ট ফোন না ব্যবহার করাসহ নানা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে রংপুর থেকে ঢাকায় যে-সকল নেতাকর্মী গিয়েছেন এবং আজ যাবেন তাদের ব্যয়ভার কারা বহন করবে, তা নিয়ে মুখ খুলছেন জেলা ও মহানগর। গত সোমবার (২৩ অক্টোবর) বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুনুর রশীদ রংপুর নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত কর্মী সভায় মহাসমাবেশ সফল করতে কৌশল অবলম্বনের ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন।
এদিকে মহাসমাবেশ ঘিরে গত দুইদিনে রংপুরে বিএনপি-জামায়াতের ২০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ পরিস্থিতিতে নেতাকর্মীরা আশঙ্কা করছেন, যাত্রাপথে তাদের বাধা ও হয়রানি করা হতে পারে। হামলাও হতে পারে।
রংপুর মহানগর ও জেলার তৃণমূল পর্যায়ের একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে এমন আশঙ্কার কথা জানা গেছে। তবে মহাসমাবেশের আগেই আগাম রংপুরের অনেক নেতাকর্মী ঢাকায় রওনা হয়েছেন। বাধা ও হয়রানি এড়াতে আগাম যাওয়ার পথ বেছে নিয়েছেন তারা।
ঢাকার মহাসমাবেশে বিএনপিসহ তাদের মিত্র দলগুলোর বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ঢাকায় যাচ্ছেন। এছাড়াও রংপুর মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম মিজুসহ পদ মহানগর ও জেলার বঞ্চিত নেতাকর্মীরা আলাদাভাবে ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ প্রেরণ ও মুক্তির লক্ষ্যে ১ দফা দাবিতে সোমবার রংপুরে বিএনপির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির সাবেক এমপি ও দলটির যুগ্ম মহাসচিব হারুন উর রশীদ।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আগামী ২৮ তারিখ বিএনপির মহাসমাবেশ ঢাকায় করা হবে। সমাবেশকে ঘিরে আমাদের সব রকম প্রস্তুতি আছে, সেদিন আমরা আগামী কর্মসূচি দেব। রংপুর মহানগর ও জেলার সকল নেতৃবৃন্দ প্রস্তুত আছেন তো। এ সময় উপস্থিত নেতাকর্মী হ্যাঁ সূচক জবাব দেন। তারা মহাসমাবেশ সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন।
এদিকে, রংপুর নগরীর কামারপাড়া ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে কাউন্টারের ম্যানেজার ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রংপুর থেকে ঢাকায় দিনে-রাতে অন্তত শতাধিক বাস যাতায়াত করে। বেশিরভাগ বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। একইভাবে রংপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়েও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) পর্যন্ত অগ্রিম কোনো টিকিট নেই।
রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম জানান, ঢাকার মহাসমাবেশ শান্তিপূর্ণ হবে। ফলে যারা যাওয়ার তারাই যাবেন। ঢাকায় নেতাকর্মীদের যাতায়াত, অবস্থান এবং খাওয়া-দাওয়াসহ সার্বিক ব্যয় কারা মেটাবেন সে দলের ব্যাপার। এ বিষয়ে আমার মন্তব্য করা ঠিক হবে না।
+ There are no comments
Add yours