বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আবারও কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বিএনপি ও মিয়া্ন আরেফীসহ নানা বিষয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ব্যক্ত করেছেন দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল।
সোমবার (৫ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বেদান্ত প্যাটেলকে প্রশ্ন করা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কর্মীরা গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের অজুহাতে চলমান ভাঙচুর এবং সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করে বাংলাদেশে পরবর্তী সংসদ নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ ব্যাহত করেছে। আপনি কি জাতীয়তাবাদী দলকে সহিংসতা বন্ধ করে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে বলবেন?
জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, ‘আগামী জানুয়ারিতে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচনের আগের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং করতে থাকব এবং আমরা যেকোনো সহিংসতার ঘটনাকে মারাত্মক গুরুত্ব দিয়ে আমলে নিচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সরকার, বিরোধী দলগুলো, নাগরিক সমাজ ও অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে বাংলাদেশি জনগণের স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছি এবং জানিয়ে যাব।’
আরেক প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয়, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সত্যিই কঠিন পরিস্থিতিতে রয়েছেন। গত সপ্তাহে জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নেতারা একজন মার্কিন নাগরিককে তাদের প্রধান কার্যালয়ে গণমাধ্যমের সামনে হাজির করে এটি জানাতে যে, তিনি (মিয়ান আরেফী) প্রেসিডেন্ট বাইডেনের উপদেষ্টা এবং বাইডেনের সঙ্গে প্রতিদিন তার ১০ থেকে ১৫ বার যোগাযোগ হয়। তারপর দলটির আরেক নেতা পিটার হাসকে অবতার হিসেবে উল্লেখ করেন ও জাতীয়তাবাদী দলের উদ্ধারকারী হিসেবে আখ্যা দেন। আপনি কি স্পষ্টভাবে জাতীয়তাবাদী দলের এই দাবি অস্বীকার করবেন?
জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, ‘আমি সে বিষয়ে কোনো প্রতিবেদন দেখিনি এবং সত্যি বলতে আপনি কি বিষয়ে কথা বলছেন তা নিয়ে আমার সত্যিই কোনো ধারণা নেই।’
অপর এক প্রশ্নে বলা হয়, সারা বাংলাদেশে বিক্ষোভ চলছে। তারা ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছে। বিপরীতে সরকার এক অর্থে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করছে। আটক করা হয়েছে বিএনপি মহাসচিবসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের ৮ হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে। ২৮ অক্টোবর থেকে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা তার দলের সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন, বিরোধী দলের সদস্যদের আগুনে নিক্ষেপ করতে বা তাদের হাত পোড়াতে। যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য পরিবেশ তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ—সেই পরিবেশ তৈরির জন্য আপনারা কি বাংলাদেশের জনগণের পাশে থাকবেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনে তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে সহায়তা করবেন?
এ সময় তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি জনগণের কল্যাণে সরকার, বিরোধী দল, নাগরিক সমাজ ও অন্যান্য অংশীদারদের একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাতে উল্লিখিত পক্ষগুলোর সঙ্গে যথাযথভাবে জড়িত হওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
+ There are no comments
Add yours