মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় সীমানা সংক্রান্ত জটিলতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলা থেকে ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে রোকেয়া বেগম (৬৫) নামের এক বৃদ্ধার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নের পৈক্ষারপাড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রোকেয়া বেগম উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নের পৈক্ষারপাড় গ্রামের মৃত এবায়দুল্লাহ সরকারের স্ত্রী।
প্রতিবেশী ও নিহতের স্বজনরা জানান, সীমানা সংক্রান্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে পৈক্ষারপাড় গ্রামের মৃত এবায়দুল্লাহ সরকারের ছেলেদের সঙ্গে চাচাতো ভাই মৃত শহিদুল্লাহ সরকারের ছেলেদের বিরোধ চলছিল। উভয় পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে পৈক্ষারপাড় গ্রামে তাদের নিজ বাড়িতেই গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
শনিবার দুপুর ২টা থেকে সালিশ শুরু হয়। সালিশের রায়ে বিরোধপূর্ণ জায়গাটি মৃত এবায়দুল্লাহর ছেলেরা পাবে বলে রায় দেওয়া হয়। তবে জায়গাটি মেপে খড়ের গাদা সরিয়ে তাদের বুঝিয়ে দেওয়ার সময় কথা কাটাকাটির জেরে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজন সোহেলকে মারধর করতে থাকে।
এটি দেখে তার বৃদ্ধা মা রোকেয়া বেগম হামলাকারীদের হাত থেকে ছেলেকে বাঁচাতে গেলে তাকেও তারা মারধর করে। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের ছেলে সোহেল সরকার বলেন, আমার চাচাতো ভাই সজীব, মঞ্জু ও রাজিব আমাকে মারধর করছিল। আমার মা আমাকে বাঁচাতে এলে তাকে কিল-ঘুষি ও লাঠিপেটা করে তারা। আমার মাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত সকলের ফাঁসি চাই।
এ বিষয়ে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, আজ বিকেল পৌনে ৪টার দিকে আমাদের হাসপাতালে বৃদ্ধাকে নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক পরীক্ষানিরীক্ষা শেষে আমরা তাকে মৃত ঘোষণা করি। তার গায়ে আঘাতের তেমন চিহ্ন পাওয়া যায়নি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মুন্সীগঞ্জ সদর-গজারিয়া সার্কেল) থান্দার খায়রুল হাসান বলেন, গ্রাম্য সালিশে সংঘর্ষের ঘটনায় এক নারী মারা গেছেন বলে খবর পেয়েছি। ঘটনার পরপর পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত বলা যাবে।
+ There are no comments
Add yours