২০২৩ সালের পুরোটা সময়জুড়ে ঢাকাবাসীর জন্য আতঙ্কের নাম ছিল ছিনতাই।
ঢাকার অলিগলি থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় ছিনতাইয়ের শিকার হতে হয়েছে অসংখ্য মানুষকে। এসব ঘটনায় অনেকে মোবাইলসহ টাকা-পয়সা হারিয়েছেন। এক পুলিশ সদস্য হারিয়েছেন প্রাণ, আহত হয়েছেন অনেকে।
সর্বশেষ গত ১ জুলাই রাজধানীর ফার্মগেটে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে মনিরুজ্জামান তালুকদার (৪০) নামের এক পুলিশ কনস্টেবল নিহত হন। গত ২৯ জুন রাতে রামপুরায় বিটিভি অফিসের সামনের রাস্তায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে রাকিবুল হাসান রানা (৩০) নামের এক সাংবাদিক গুরুতর আহত হন। তিনি বেসরকারি ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের সহকারী প্রযোজক। ওই দুই ঘটনার পর ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযানে নামে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। তাদের বিশেষ অভিযানে ৬৭৯ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে, ঢাকা মহানগরীকে ছিনতাইমুক্ত করে নগরবাসীর চলাচল নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে এবং অপরাধ ভীতি দূর করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয় গত ৭ অক্টোবর।
ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, কোনো এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলে তার দায়দায়িত্ব নির্দিষ্ট থানার ওসিকে নিতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে প্রয়োজনে ওসিদের শাস্তির ব্যবস্থাও করবে ডিএমপি।
চলতি বছরের জুন থেকে জুলাই পর্যন্ত যখন একের পর এক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে তখন নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। বিশেষ করে পুলিশ সদস্যকে হত্যা এবং সাংবাদিক আহত হওয়ার পর ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যায় ডিএমপি। ছিনতাইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সব ডিসি ও ওসিদের সঙ্গে আলাদা-আলাদা বৈঠক করেন তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। বৈঠকে ডিএমপি কমিশনার সবাইকে নির্দেশ দেন, যে কোনো মূল্যে ছিনতাইকারীদের নিয়ন্ত্রণে আনার। রাতে পুলিশের টহল বাড়ানোরও নির্দেশ দেন তিনি।
তবে, ডিএমপির এমন নড়েচড়ে বসাতেও কাজ হয়নি। রাজধানীজুড়ে এখনও ছিনতাইকারীদের উৎপাত রয়ে গেছে। আগের চেয়ে কিছুটা কম হলেও মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত ঢাকার রাস্তা এখনও অনিরাপদ সাধারণ মানুষের জন্য।
নতুন বছরে নিরাপদ ঢাকা চান মহানগরের বাসিন্দারা। তারা চান, দিন কিংবা রাত, যে কোনো সময় এ শহরের রাস্তা তাদের জন্য যেন নিরাপদ থাকে। আর যেন কেউ ছিনতাইয়ের শিকার না হন।
সূত্রঃ ঢা. পো.
+ There are no comments
Add yours