সরকার পতনের লক্ষ্যে আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গত ২০ ডিসেম্বর ‘সর্বাত্মক অসহযোগ’ আন্দোলনের’ ডাক দিয়েছে বিএনপি। তবে এখন পর্যন্ত তাতে দৃশ্যমান কোনো সাড়া মেলেনি।
বিএনপির পক্ষ থেকে ভোটের আগেই সুনির্দিষ্ট যেসব ক্ষেত্রে সরকারকে অসহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়েছে, গতকাল রোববার পর্যন্ত তার কোনোটিতেই প্রভাব পড়েনি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
তবে বিএনপি নেতারা বলছেন, তাদের মূল লক্ষ্য ৭ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকানো ও বর্তমান সরকারের পতন। ভোট গ্রহণের নির্ধারিত দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে অসহযোগসহ সর্বাত্মক আন্দোলনের প্রভাব স্পষ্ট হবে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন কালবেলাকে বলেন, ‘সবেমাত্র অসহযোগ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। আরও দু-এক দিন পর এর প্রভাব স্পষ্ট হতে শুরু করবে। এই কর্মসূচি নিয়ে কোনো অস্পষ্টতা নেই। দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে এ কর্মর্সূচি নিয়ে কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব নেই।’
গত ২০ ডিসেম্বর অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তার ঘোষণা অনুযায়ী অসহযোগের ক্ষেত্রগুলো হলো—৭ জানুয়ারি ভোট বর্জন, ভোটকেন্দ্রে না যাওয়া, নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্বাচনী দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকা, সেবামূলক কর ও খাজনা পরিশোধ বন্ধ রাখা, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানিসহ ইউটিলিটি বিল না দেওয়া, ব্যাংকে অর্থ আমানত না রাখা এবং বিভিন্ন মামলায় আসামি হওয়া নেতাকর্মীদের আদালতে হাজিরা না দেওয়া।
কোনো ক্ষেত্রেই অসহযোগের প্রভাব দৃশ্যমান নয়। সরকারি-বেসরকারি সবরকম অফিসেই পুরোদমে কাজ চলছে। ব্যাংকের লেনদেন স্বাভাবিক। গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির বিল এবং কর পরিশোধ কার্যক্রমে আগের চেয়ে কোনো ব্যতিক্রম চিত্র নেই।
আদালতের কার্যক্রমও স্বাভাবিক গতিতে চলেছে। এমনকি খোদ বিএনপি নেতাকর্মীরাও বিভিন্ন মামলায় হাজিরা দিয়েছেন। তবে অনেক নেতাকর্মীর মধ্যে এ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব রয়েছে বলে জানা গেছে।
ঢাকার সিএমএম আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখা সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর পাঁচ থানার তদন্তাধীন পৃথক পাঁচ মামলায় বিএনপির ১০২ নেতাকর্মী আদালতে হাজিরা দিয়েছেন। তবে আদালতে উপস্থিত না হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে আরও ৪১ নেতাকর্মী সময়ের আবেদন করেন।
এর মধ্যে ২০২২ সালের কদমতলী থানার নাশকতার মামলায় ১৯ নেতাকর্মী হাজিরা দিয়েছেন। এ মামলায় আরও ৯ নেতাকর্মী সময়ের আবেদন দেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল্লাহ এ আবেদন মঞ্জুর করেছেন। শাহ আলী থানার নাশকতার মামলায় ৪৭ নেতাকর্মী হাজিরা দেন। এ মামলায় ২৪ জন সময়ের আবেদন করেন। অন্য ১৯ আসামি কারাগারে রয়েছেন। আগামী ২২ জানুয়ারি এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
+ There are no comments
Add yours