নির্বাচনী নিরাপত্তায় মাঠে থাকবে পৌনে ২ লাখ পুলিশ

Estimated read time 1 min read
Ad1

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী, ভোটার, প্রিজাইডিং অফিসার ও রিটার্নিং অফিসারসহ প্রত্যেককে নিরাপত্তা দিতে ইতোমধ্যে নির্বাচনী ছক তৈরি করেছে পুলিশ।

এ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য মাঠে থাকবে পুলিশের এক লাখ ৭৫ হাজার সদস্য। পুলিশ সদরদপ্তর সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনে সেনাবাহিনী, বিজিবি, আনসার, র‍্যাব সদস্যরা মাঠে থাকলেও নিরাপত্তার মূল দায়িত্ব থাকবে পুলিশের ওপর। নির্বাচনে পুলিশের প্রায় ৮০ শতাংশ সদস্য মাঠে মোতায়েন থাকবে।

পুলিশ জানায়, নির্বাচনের ২-১ দিন আগ থেকে মাঠে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবেন পুলিশ সদস্যরা। নির্বাচন শেষ হওয়ার পরেও ২-৩ দিন পর পর্যন্ত মাঠে থাকবে এক লাখ ৭৫ হাজার পুলিশ সদস্য।

নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের সময় পুলিশ সদস্যরা  রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়, সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়, কেন্দ্রে ব্যালট ও ব্যালট বাক্স আনা-নেওয়া, নির্বাচনী কেন্দ্রে সব জায়গায় পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে।

যেহেতু জাতীয় সংসদ নির্বাচন রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, তাই অতি প্রয়োজন এবং একান্তই পারিবারিক কোনো সমস্যা না থাকলে কাউকে ছুটি দেওয়া হচ্ছে না।

এ বিষয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ডিআইজি (অপারেশনস) মো. আনোয়ার হোসেনে ঢাকা পোস্টকে বলেন, পুলিশের কতজন সদস্য মাঠে থাকবে, তা এখনো ফাইনাল হয়নি। তবে আনুমানিক এক লাখ ৭৫ হাজার পুলিশ সদস্য নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠে থাকবে।

পুলিশের মোতায়েন নির্বাচনের কত দিন দিন আগে থেকে শুরু হবে— জানতে চাইলে তিনি বলেন, এইটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী করা হবে।

আসন্ন এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ২২ হাজার সদস্য মোতায়েন থাকবে। এ বিষয়ে ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস্) বিপ্লব কুমার সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, নির্বাচনের আগে ও পরে ঢাকা মহানগরীতে ২২ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবেন। নির্বাচনকালীন সময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদরদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করবে ডিএমপি।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুই লাখ ১৫ হাজার সদস্য মোতায়েন থাকবে। সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ৪ লাখ ৭২ হাজার সদস্য মোতায়েন থাকবে। এবারের নির্বাচনে মোট ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পাবেন।

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বশীল সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে। সূত্রটি জানিয়েছে, ৩০০ নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ১৫-১৭ নিরাপত্তা সদস্যের একটি দল মোতায়েন করা হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী যেসব দায়িত্ব পালন করবে সশস্ত্র বাহিনী

১।  ফৌজদারি কার্যবিধি ও অন্যান্য আইনের বিধান অনুসারে এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা Instruction Regarding Aid to the Civil Power এর ৭ম ও ১০ম অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী সশস্ত্র বাহিনীর কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।

২। রিটার্নিং অফিসারের সাথে পরামর্শক্রমে প্রয়োজন অনুসারে উপজেলা/থানায় সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন হবে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সশস্ত্র বাহিনী অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহায়তা প্রদান করবে।

৩। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রতিটি জেলা/উপজেলা/ মেট্রোপলিটন এলাকার নোডাল পয়েন্ট ও অন্যান্য সুবিধাজনক স্থানে অবস্থান করবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী রিটার্নিং অফিসারের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে টহল ও অন্যান্য অভিযানিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

৪। রিটার্নিং অফিসার বা প্রিজাইডিং অফিসারের চাহিদার প্রেক্ষিতে ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরে কিংবা ভোটগণনা কক্ষের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে দায়িত্ব পালন করবে।

৫। সশস্ত্র বাহিনীর টিমের সাথে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত করা হবে এবং আইন, বিধি ও পদ্ধতিগতভাবে কার্যক্রম গৃহীত হবে।

৬। উপকূলবর্তী এলাকায় নৌবাহিনী প্রয়োজন অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবে।

৭। ঝুঁকির বিবেচনায় রিটার্নিং অফিসারের সাথে আলোচনাক্রমে প্রতিটি জেলায় নিয়োজিত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যের সংখ্যা কম/বেশি করা যাবে।

৮। পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজন অনুযায়ী নির্দেশক্রমে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক/মহাসড়কসমূহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

৯।  বিমান বাহিনী প্রয়োজনীয় সংখ্যক হেলিকপ্টার ও পরিবহন বিমান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, নির্বাচন
কমিশন সচিবালয় ও বাহিনীসমূহের অনুরোধে উড্ডয়ন সহায়তা প্রদান করবে।

১০। সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের নির্দেশনা অনুসারে এলাকাভিত্তিক মোতায়েন পরিকল্পনা  চূড়ান্ত করা হবে।

১১।  বাস্তবতা ও প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার এর অনুরোধক্রমে চাহিদামতো আইনানুগ অন্যান্য কার্যক্রম সম্পাদন করতে হবে।

যে যে দায়িত্ব পালন করবে বিজিবি, কোস্ট গার্ড, আর্মড পুলিশ ও আনসার ব্যাটালিয়ন

১। বিজিবি, কোস্ট গার্ড, আর্মড পুলিশ, আনসার ব্যাটালিয়ন মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে

২। জেলা, উপজেলা, থানাসমূহে বিজিবি এবং উপকূলীয় এলাকাসমূহে কোস্ট গার্ড দায়িত্ব পালন করবে।

৩। রিটার্নিং অফিসারের চাহিদা অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহায়তা করবে।

৪। বিজিবি আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে হেলিকপ্টার ও ডগ স্কোয়াড ব্যবহার করতে পারবে।

৫। রিটার্নিং অফিসার ও প্রিজাইডিং অফিসারের চাহিদার প্রেক্ষিতে ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরে কিংবা ভোটগণনা কক্ষের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে দায়িত্ব পালন করবে।

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) যেসব দায়িত্ব পালন করবেন

১। র‍্যাব মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে।

২। নির্বাচনি এলাকায় সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করবে।

৩। রিটার্নিং অফিসারের চাহিদার প্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহায়তা করবে।

৪। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনে হেলিকপ্টার ও ডগ স্কোয়াড ব্যবহার করতে পারবে।

৫। রিটার্নিং অফিসার ও প্রিজাইডিং অফিসারের চাহিদার প্রেক্ষিতে ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরে কিংবা ভোটগণনা কক্ষের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে দায়িত্ব পালন করবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক https://khoborbangla24.net

বিশ্বজুড়ে দেশের খবর

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours