আসনপ্রতি সাত কোটি টাকার বেশি খরচ ইসির

Estimated read time 1 min read
Ad1

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য বিশাল অঙ্কের বাজেট ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ অর্থ ভোটের দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি প্রিজাইডিং-পোলিং অফিসারসহ নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের দুদিনের সম্মানী ভাতা হিসেবে দেওয়া হবে।

ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ২৩০০ কোটি টাকা। এ নির্বাচনে আসনপ্রতি সাত কোটি টাকার বেশি ব্যয় করবে ইসি।

তিনি আরও জানান, নির্বাচন পরিচালনা ও আইনশৃঙ্খলা খাত মিলিয়ে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছিল। পরে বরাদ্দের চাহিদা বেড়ে সবমিলিয়ে ব্যয় প্রায় ২৩০০ কোটি টাকায় দাঁড়াতে পারে। 

ইসি কর্মকর্তারা জানান, এবারের নির্বাচনে তিন হাজারের মতো ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে থাকবেন। এ ছাড়া, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যের সংখ্যা ও মোতায়েনের সময় বাড়ায় ব্যয় বেড়েছে।

জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে প্রাপ্ত চাহিদা অনুযায়ী সম্ভাব্য ব্যয় প্রায় এক হাজার ২২৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা এবং নির্বাচন পরিচালনা খাতে সম্ভাব্য ব্যয় এক হাজার ৫০ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এতে আসনপ্রতি ব্যয় দাঁড়াচ্ছে সাত কোটি টাকার বেশি।

সংসদ নির্বাচনে ব্যয় বরাদ্দের বিষয়ে অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ইসির জন্য প্রথমে এক হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। আমরা ইতোমধ্যে জেনেছি, সময় বাড়ানো, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা বাড়ানো ইত্যাদি কারণে ব্যয় অনেক বেড়েছে। দুই হাজার কোটি টাকার বেশি অতিরিক্ত ব্যয় বরাদ্দ লাগবে। ইতোমধ্যে ইসি সচিব মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা করে ৭০২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে দিয়েছি। বাকিটাও দেওয়া হবে।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এক দিনের জন্য প্রিজাইডিং অফিসার চার হাজার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার তিন হাজার এবং পোলিং অফিসার দুই হাজার করে টাকা পাবেন। যাতায়াত ভাড়ার জন্য তারা অতিরিক্ত জনপ্রতি এক হাজার টাকা করে পাবেন।

এ ছাড়া, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ভোট প্রদানের গোপন কক্ষ ও বেষ্টনীর জন্য প্রতিটি কক্ষের জন্য ৮০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট বা ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা সম্পন্ন কর্মকর্তারা নির্বাচনের আগে ও পরের দুই দিনসহ মোট পাঁচ দিনের জন্য দিনে নয় হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। স্টাফ ভাতা হিসেবে প্রতিদিন পাবেন আরও এক হাজার টাকা।

এর বাইরে ব্যালট পেপার আনা-নেওয়া, রিটার্নিং অফিসারের সহায়ক কর্মকর্তাদেরও ভাতা দেওয়া হবে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের একাদশ সংসদের তুলনায় ২০২৪ সালে ভোটার, ভোটকেন্দ্র, ভোটকক্ষ যেমন বেড়েছে; তেমনই ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, নির্বাচনী কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনি সরঞ্জামও বেশি ব্যবস্থাপনা করতে হয়েছে। 

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের ব্যাপ্তি ১০ দিন থেকে বাড়িয়ে ১৩ দিন করা হয়েছে। নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সম্মানীসহ জ্বালানি, পরিবহন খাতের বরাদ্দও বেড়েছে। 

এবার ১১ কোটি ৯৭ লাখ ভোটারের এ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র্রের সংখ্যা  ৪২ হাজারের বেশি। ভোটকক্ষ দুই লাখ ৬১ হাজারের বেশি। 

প্রতি কেন্দ্রে থাকবেন ১৫-১৭ জন নিরাপত্তা সদস্য 

এবারের নির্বাচনে সারা দেশে আনসার সদস্য থাকছেন পাঁচ লাখ ১৬ হাজার জন। পুলিশ ও র‌্যাব থাকছেন এক লাখ ৮২ হাজার ৯১ জন, কোস্টগার্ড দুই হাজার ৩৫০ জন এবং ৪৬ হাজার ৮৭৬ জন বিজিবি সদস্য থাকছেন। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য থাকছেন প্রায় অর্ধলাখ।

নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে এবার চার লাখ ছয় হাজার ৩৬৪ প্রিজাইডিং অফিসার, দুই লাখ ৮৭ হাজার ৭২২ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং পাঁচ লাখ ৭৫ হাজার ৪৪৩ জন পোলিং অফিসার, সবমিলিয়ে মোট নয় লাখ নয় হাজার ৫২৯ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। 

দলীয় ও স্বতন্ত্র মিলে এবার ১৯৭০ জন প্রার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিসহ অংশ নিচ্ছে ২৮টি দল। বিএনপি ও সমমনাদের ভোট বর্জনের মুখে এবারও আইনশৃঙ্খলায় বেশি সময় ধরে নিরাপত্তা সদস্য মোতায়েন রাখা হচ্ছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক https://khoborbangla24.net

বিশ্বজুড়ে দেশের খবর

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours