সব রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দুর্বার ছুটে চলা শেখ হাসিনাই ফের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন। এক নতুন বাংলাদেশের রূপকার বঙ্গবন্ধুকন্যার রেকর্ড টানা চতুর্থবারের মতো সরকারপ্রধানের পদ অলংকৃত করা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিপুল বিজয় এনে দিয়ে ক্যারিশমেটিক এ নেত্রী পঞ্চমবারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে আরেক রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন।
গতকাল সকাল ৮টায় ঢাকা সিটি কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুথ থেকে বের হয়ে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নে তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ। হতে পারে এটি ছোট দেশ, কিন্তু এর জনসংখ্যা অনেক বেশি। জনগণই আমাদের প্রধান শক্তি। কাজেই কে কী বলে, তা নিয়ে আমি মাথা ঘামাই না।
প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যরা ভোটকেন্দ্রে পৌঁছলে ঢাকা-১০ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফেরদৌস আহমেদ তাদের স্বাগত জানান। এ কেন্দ্রে শেখ রেহানা উপস্থিত থাকলেও তিনি ও তার ছেলে ববি গুলশান মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেন। সে সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন ঢাকা-১৭ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাত।
১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যসহ হত্যার সময় জার্মানিতে ছিলেন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। এরপর প্রায় অর্ধযুগ নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে ১৯৮১ সালে দেশে ফেরেন তিনি। হাল ধরেন স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্ব দেওয়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের। প্রায় ৪৪ বছরের রাজনৈতিক পথচলায় ভোটের অধিকার লড়াইয়ে অবিচল পথ হেঁটেছেন তিনি। ১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর সপ্তম সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে শেখ হাসিনা ২৩ জুন প্রথমবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। নবম সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনের ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তৃতীয়বার শপথগ্রহণ করেন তিনি। সর্বশেষ একাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি সরকার গঠন করেন। গতকালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ জয়ে শেখ হাসিনার পঞ্চমবারের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দ্বার উন্মোচিত হলো। এতবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ারও রেকর্ড হবে এটি। সব মিলিয়ে নতুন বছরে নতুন ইতিহাসের দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন শেখ হাসিনা। এ পর্যন্ত তিনবার বিরোধী দলীয় নেতার দায়িত্বও পালন করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
+ There are no comments
Add yours